তুরস্কে ভূমিকম্পে হাজারো প্রাণহানি, গুগলের সতর্কতা ব্যবস্থা ব্যর্থ

২০২৩ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের সময় তুরস্কে গুগলের ভূমিকম্প সতর্কতা ব্যবস্থা কার্যকরভাবে কাজ করেনি বলে স্বীকার করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। তখন ওই ভূমিকম্পে দেশটিতে ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন এবং এক লাখের বেশি আহত হন।

সোমবার (২৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গুগলের অ্যান্ড্রয়েড আর্থকুয়াক অ্যালার্টস (এইএ) প্রযুক্তি সময়মতো উচ্চ সতর্কবার্তা পাঠাতে ব্যর্থ হয়, যদিও তা কোটি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব ছিল।

ভূমিকম্পের সময় ‘টেক অ্যাকশন’ সতর্কবার্তা মাত্র ৪৬৯ জনকে পাঠানো হয়েছিল। আর ‘বি অ্যাওয়ার’ ধরনের হালকা সতর্কতা পাঁচ লাখ জনকে পাঠানো হয়, যা ফোনে তেমনভাবে দৃশ্যমান হয় না।

গুগল শুরুতে বলেছিল, তাদের সতর্কতা ব্যবস্থা ভালোভাবে কাজ করেছে। তবে পরে তারা জানায়, প্রথম ভূমিকম্পের সময় সিস্টেমটি মাত্রা ৭.৮ নয়, বরং ৪.৫ থেকে ৪.৯ হিসেবে শনাক্ত করে, ফলে কার্যকর সতর্কতা পাঠানো সম্ভব হয়নি।

পরে গুগল পুনঃবিশ্লেষণ করে জানায়, নতুন অ্যালগরিদমে এই সতর্কতা ১ কোটি মানুষকে ‘টেক অ্যাকশন’ এবং ৬ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে ‘বি অ্যাওয়ার’ বার্তা পাঠাতে সক্ষম হয়।

তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, জাতীয় সতর্কতা ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে এই প্রযুক্তি এখনো উপযুক্ত নয়। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অনেক দেশ গুগলের ওপর অতিরিক্তভাবে নির্ভর করছে।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, তথ্য প্রকাশে বিলম্ব ও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে হাজারো প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়নি। তুরস্কের ভূমিকম্পে অধিকাংশ মানুষ ভোরে ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন কেবল উচ্চ মাত্রার সতর্কতাই জীবন বাঁচাতে পারতো।

গুগল এখন ৯৮টি দেশে এই সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করেছে এবং জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও উন্নত সংস্করণ আনা হবে। তবে সাম্প্রতিক ২০২৫ সালের মিয়ানমার ভূমিকম্পে এই প্রযুক্তি কেমন কাজ করেছে, সে বিষয়ে এখনো গুগল কোনো তথ্য দেয়নি।

অর্থসূচক/ এএকে

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.