যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসনের নিয়ম আরও কঠোর করতে উদ্যোগ নিচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নাগরিকত্ব পরীক্ষাকে আরও কঠিন করা এবং এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে উচ্চ বেতনের চাকরিদাতাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংস্থার (ইউএসসিআইএস) পরিচালক জোসেফ এডলো। শনিবার (২৬ জুলাই) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এডলো বলেন, “বর্তমানে নাগরিকত্ব পরীক্ষাটি খুব কঠিন নয়। মুখস্থ করলেই অনেকেই পাস করতে পারেন। এতে আমরা সত্যিকারের আইন ও সংবিধানের চেতনাকে অনুসরণ করছি না।”
তিনি জানান, ইউএসসিআইএস ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে চালু হওয়া সংস্করণটি আবার চালুর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। ওই সংস্করণে প্রশ্নের সংখ্যা বেশি এবং পরীক্ষার মান কঠিন ছিল।
বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৮৫ হাজার বিদেশি পেশাজীবীকে এইচ-১বি ভিসা দেওয়া হয়। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব পাওয়া প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এডলো বলেন, “এইচ-১বি ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা, অর্থনীতি ও কর্মীদের সহায়তা করা, তাদের জায়গা দখল নয়।”
এই প্রস্তাবের ফলে তরুণ, উচ্চশিক্ষিত ও প্রতিভাবান অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ হারাতে পারেন বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
ক্যাটো ইনস্টিটিউটের অভিবাসন গবেষণা পরিচালক ডেভিড বিঅর বলেন, “শুধু উচ্চ বেতনের ভিত্তিতে এইচ-১বি দেওয়া হলে মূলত বয়স্ক কর্মীরাই সুযোগ পাবেন, যারা শিগগিরই অবসর নেবেন কিংবা দেশ ছাড়বেন।”
তিনি আরও বলেন, “নাগরিকত্ব পরীক্ষাকে সহজ বলা বিস্ময়কর। বেশিরভাগ আমেরিকানই সেটি পাস করতে পারবেন না।”
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ এইচ-১বি ভিসা প্রক্রিয়ায় বর্তমানে চালু থাকা লটারিভিত্তিক পদ্ধতির পরিবর্তে বেতনের ভিত্তিতে একটি নতুন পদ্ধতির বিষয়েও ভাবছে।
গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর প্রোগ্রেস-এর মতে, নতুন ব্যবস্থায় এইচ-১বি কর্মসূচির অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায় ৮৮ শতাংশ বাড়তে পারে।
অভিবাসন বিষয়ে কড়া অবস্থানে থাকা রিপাবলিকানদের সমালোচনার মধ্যেও জোসেফ এডলো বৈধ অভিবাসনের পক্ষে কথা বলেন। তবে তার মতে, এসব অভিবাসী যেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে অবদান রাখতে পারেন, সেটিই মূল বিষয় হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, “আমরা যদি দেখি কেউ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে, তাহলে তাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
তবে নাগরিকত্ব পরীক্ষা বা এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হলে কংগ্রেস বা সংশ্লিষ্ট ফেডারেল সংস্থাগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন হবে। বর্তমানে এ নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.