আলুর দাম ন্যূনতম ২৫ টাকা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়কে চিঠি

আলুর উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারমূল্য আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় হিমাগার ফটকে প্রতি কেজি আলুর ন্যূনতম দাম ২৫ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিমাগার সমিতি। সংগঠনটির দাবি, দাম না বাড়ালে কৃষকেরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বে এবং আগামী মৌসুমে আলু চাষে নিরুৎসাহিত হবে, যার পরিণতিতে দেশে খাদ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই দাবি জানায় হিমাগার সমিতি। চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয় অর্থ, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছেও।

সমিতির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী চিঠিতে উল্লেখ করেন, ২০২৫ সালে দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪০ লাখ টন বেশি। ফলে বাজারে আলুর দাম ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বর্তমানে হিমাগার ফটকে প্রতি কেজি আলুর দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা, অথচ কৃষকের উৎপাদন খরচ পড়েছে গড়ে ১৭ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণ ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ এই ব্যয় ২৫ টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, “বর্তমানে কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতেই পারছেন না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে হিমাগার ফটকে আলুর ন্যূনতম মূল্য কেজিপ্রতি ২৫ টাকা নির্ধারণ করা একান্ত প্রয়োজন।”

আলুর ব্যবহার ও দাম স্থিতিশীল করতে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আলু অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠনটি। বর্তমানে ৫৫ লাখ নিম্নআয়ের পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে চাল দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি করে আলু দেওয়া যেতে পারে বলেও প্রস্তাবনা দিয়েছে হিমাগার সমিতি।

দেশের ৩৫০টির বেশি হিমাগারে বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ টন আলু সংরক্ষিত রয়েছে। দাম না বাড়লে এর ২০–৩০ শতাংশ আলু খালাস হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে হিমাগারে থাকা ৭–১০ লাখ টন আলু বছরের শেষে নষ্ট হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

বাংলাদেশ হিমাগার সমিতির মতে, আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণের সমন্বয়হীনতা বাজারে ধস নামাতে পারে। এর প্রভাব শুধু কৃষকের ওপরই নয়, দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তা ও নীতিগত ভারসাম্যেও পড়বে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.