সংস্কার, সক্ষমতা ও সহযোগিতার আহ্বান: টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫ অনুষ্ঠিত

দেশের টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো খাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলো দ্রুত নীতিগত সংস্কার, অবকাঠামোগত সক্ষমতা এবং শক্তিশালী আন্তঃখাত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫’-এ এসব বিষয় উঠে আসে।

‘ইউনিফায়িং টাওয়ারকো ফর আ স্মার্টার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এ ফোরামে জানানো হয়, দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজের ৯০ শতাংশেরও বেশি নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে টাওয়ার কোম্পানিগুলো। তারা ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, সার্বিক সংযোগ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ফোরামের মূল আকর্ষণ ছিল একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনা, যেখানে শীর্ষ লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ার কোম্পানির নির্বাহীরা অংশ নেন এবং খাতটির চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।

টেলিকম খাতের নেতারা বিটিআরসি’র নতুন লাইসেন্সিং প্রকল্প ও প্রস্তাবিত ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড কানেক্টিভিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (এন আইসিএসপি) কাঠামোকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এগুলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষ টেলিকম অবকাঠামো গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। তবে নীতির স্বচ্ছতা, বাস্তবায়নের জটিলতা, ডিএএস ও আইবিএস বৈষম্য এবং ব্যাটারি চুরি, সাইট অধিগ্রহণ বিলম্বের মতো দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ দূর করার আহ্বান জানান তারা।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি বিকাশে টেলিযোগাযোগ খাতের কার্যকারিতা বাড়াতে নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং সংস্কার নীতি ২০২৫ প্রস্তাব করা হয়েছে।”

ইডটকো বাংলাদেশের সিএমডি সুনীল আইজ্যাক বলেন, “সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে কৌশলগত বিনিয়োগ আসবে, নেটওয়ার্কের মান বাড়বে এবং ডিজিটাল সেবা গ্রহণের খরচ কমবে।”

ফ্রন্টিয়ার টাওয়ারের সিইও মো. সিরাজুস সালেহীন বলেন, “আজকের আয়োজনের মাধ্যমে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানে একটি সময়োপযোগী প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠেছে।”

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ টাওয়ারকো অ্যাসোসিয়েশন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়, যা চারটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ার কোম্পানি গঠন করেছে। সংগঠনটি টেলিকম নীতিনির্ধারণ, রেগুলেটরি এঙ্গেজমেন্ট, ৫জি, আইওটি ও স্মার্ট সিটির জন্য অবকাঠামো প্রস্তুতিতে কাজ করবে।

সামিট টাওয়ারস লিমিটেডের চিফ টেকনোলজি অফিসার মো. নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, “টাওয়ার খাত দেশের ডিজিটাল জিডিপি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সক্ষম, তবে এজন্য বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করা জরুরি।”

ফোরামে আরও বক্তব্য দেন এরিকসন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম এবং ইডটকো গ্রুপের স্ট্র্যাটেজি ডিরেক্টর গায়ান কোরালেজ। তারা বলেন, ৫জি প্রযুক্তি ও অটোমেশন বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর ও শিল্পখাতে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

আলোচনার উপসংহারে টাওয়ারকো খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নির্মাণে সংস্কারমুখী, বিনিয়োগবান্ধব ও উদ্ভাবনী টাওয়ার ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.