বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসলেও দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে অস্থিরতা কাটেনি। এই প্রেক্ষাপটে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদের তদন্ত এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
যুক্তরাজ্যে বিলাসবহুল টাউনহাউজ, অ্যাপার্টমেন্টসহ শত শত সম্পত্তির মালিকানা তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লন্ডনের গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগের সরকারের ঘনিষ্ঠ ও ক্ষমতাবান অনেক ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে কোটি কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পদ কিনেছেন, যেগুলোর পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ।
রবিবার (২০ জুলাই) গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
গত মে মাসে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ দমন সংস্থা (NCA) সালমান এফ রহমান পরিবারের ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ এবং পরবর্তীতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ ফ্রিজ করে। এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের সোবহান পরিবারের সম্পত্তির ক্ষেত্রেও একই ধরনের উদ্যোগের সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে দেখা গেছে, গত এক বছরে অন্তত ২০টি লেনদেন সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়েছে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন অফিসে। এর মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান এবং লন্ডনভিত্তিক এক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যবসায়ী যুক্ত রয়েছেন।
তদন্ত চলাকালে যারা সম্পদ বিক্রি, হস্তান্তর বা পুনঃঅর্থায়নের চেষ্টা করছেন, তাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “আমরা জানি অনেকেই এখন সম্পদ বিক্রি করতে চাইছে। তাই আমরা চাই ইউকে সরকার আরও সম্পত্তি ফ্রিজ করুক।”
যুক্তরাজ্যভিত্তিক কিছু আইন ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠানও তদন্তের আওতায় এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা এসব লেনদেনে যুক্ত থেকে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করেনি।
দুর্নীতি বিরোধী সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান জো পাওয়েল এমপি বলেন, “যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, এই অর্থ চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।”
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখন ইউকে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন তদন্তাধীন আরও সম্পদ ফ্রিজ করে। তবে কেউ কেউ এই অভিযানকে দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ হিসেবে দেখলেও, সমালোচকরা একে রাজনৈতিক প্রতিশোধ বলেই মনে করছেন।
অর্থসূচক/ এএকে
Ask ChatGPT



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.