গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে হামলা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, নিহত চারজনের মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না। একই সঙ্গে এনসিপির নেতা – কর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এনসিপির নেতা ও সমর্থকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না- তা খতিয়ে দেখার দাবিও জানিয়েছে এই মানবাধিকার সংগঠনটি।
গোপালগঞ্জে যেভাবে জনসাধারণের ওপর বল প্রয়োগ ও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড ও সংবিধান উভয়েরই চরম লঙ্ঘন এবং যা একান্তই অগ্রহণযোগ্য বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। অতিরিক্ত বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এই মানবাধিকার সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নিশ্চিত মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দায়িত্ব হলো এই অধিকার সুরক্ষা করা এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সময়ে উত্তেজনা প্রশমন ও মানুষের জীবন রক্ষা নিশ্চিত করা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং গুলির শব্দ স্পষ্টভাবে শোনা যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, পুলিশের মহাপরিদর্শক গণমাধ্যমে বলেছেন পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেনি।
তাহলে এই আগ্নেয়াস্ত্র কারা ব্যবহার করল? এমন প্রশ্ন রেখে সংগঠনটি বলছে, আসক মনে করে, এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট ও প্রামাণ্য ব্যাখ্যা দেওয়া না হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, ভয় ও প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা আরও বাড়বে।
সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পরবর্তী সময়ে যেন কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানি বা সহিংসতার শিকার না হন এবং নতুন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছে এই মানবাধিকার সংগঠনটি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.