বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকি সত্ত্বেও চীনের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফল করেছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৫ দশমিক ২ শতাংশ হারে বেড়েছে। বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির, যা থেকে ফলাফল ভালো হলেও তা আগের প্রান্তিকের তুলনায় কিছুটা কম।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতি স্থিতিশীল উন্নতির ধারা ধরে রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের প্রণোদনামূলক নীতিমালা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে সাময়িক বিরতি এই প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
বিশেষ করে শিল্প খাত ছিল গতিশীল। থ্রিডি প্রিন্টিং যন্ত্র, বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং রোবট উৎপাদনের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে জুন প্রান্তিকে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া আর্থিক সেবা, পরিবহন ও প্রযুক্তি খাতেও উন্নতির ইঙ্গিত মিলেছে।
তবে খুচরা বিক্রিতে দেখা দিয়েছে মন্থরতা। মে মাসে যেখানে খুচরা বিক্রি ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, জুনে তা নেমে আসে ৪ দশমিক ৮ শতাংশে। একইসঙ্গে আবাসন খাতেও অব্যাহত রয়েছে মন্দা। নতুন ফ্ল্যাটের দাম কমেছে গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত হারে।
অর্থনীতিবিদ গু ছিংইয়াং বলেছেন, “শুল্ক হুমকির মধ্যেও অর্থনীতি স্থিতিশীল থেকেছে, তবে বছরের বাকি সময় চীনের জন্য অনিশ্চিত। বড় ধরনের প্রণোদনা প্রয়োজন হতে পারে।”
ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষক ড্যান ওয়াং মনে করছেন, চীন হয়তো ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হতে পারে, তবে ৪ শতাংশের নিচে নামতে দেবে না সরকার, কারণ এটি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর সীমা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে একে অপরের পণ্যে ১২৫–১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। যদিও সাময়িকভাবে তা স্থগিত রয়েছে, তবে আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে স্থায়ী চুক্তি না হলে আবারও উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.