ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় অন্তত ৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
নিহতদের মধ্যে অন্তত নয়জন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত ত্রাণ সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’-এর একটি কেন্দ্রের কাছাকাছি হামলায় প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে বলেও জানিয়েছে আলজাজিরা।
ইসরায়েলি বাহিনী শনিবার গাজা সিটি, খান ইউনিস, আল-নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হামলা চালায়। খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের একটি ত্রাণশিবিরে গোলাবর্ষণে ছয়জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স।
এছাড়া গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় জাতিসংঘের পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্র আল-শাফি স্কুলে বোমাবর্ষণ চালায় ইসরায়েল। এতে প্রাথমিকভাবে পাঁচজন নিহত ও অনেক আহত হন। এই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া জাহওয়া সালমি বলেন, “রাত সোয়া দুইটার দিকে বিকট বিস্ফোরণে ঘুম ভেঙে যায়। লোকজন চিৎকার করছিল, সাহায্য চাইছিল। এরপর সব নিস্তব্ধ হয়ে যায়।” তিনি জানান, তার অনেক প্রতিবেশী নিহত হয়েছেন, কিছু পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
এদিকে, গাজা সিটির উপকণ্ঠে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৫ জন আহত হন।
নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাফার উত্তরে জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে তিন শিশুসহ নয়জন নিহত হয়েছেন। আলজাজিরা বলছে, ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে এসব ত্রাণকেন্দ্রের পাশে থাকা মানুষদের লক্ষ্য করছে। জিএইচএফ কেন্দ্রের আশপাশে এ পর্যন্ত ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আল-আওয়াদ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গাজার মধ্যাঞ্চল আল-নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় আরও দুইজন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান আগ্রাসনে এ পর্যন্ত মোট ৫৭ হাজার ৩৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ৩৫ হাজার ৯৫৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের অধিকাংশকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে গাজার বিধ্বস্ত হাসপাতালগুলো।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.