মে মাসের তুলনায় জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি সাড়ে ২২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২৩ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
বুধবার (২ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংস্থাটি জানায়, জুন মাসে সারা দেশে ৬৮৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মে মাসে দুর্ঘটনায় ৫৮৭ জন নিহত হয়েছিলেন। জুনে নিহতদের মধ্যে নারী ১০৪ জন ও শিশু ১০৯ জন। এ সময় ২৫৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৮ জন, যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১২০ জন পথচারী নিহত হয়েছে। ১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৫৩টি রেল দুর্ঘটনায় ৪৪ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকার মানব সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২২৮ জন, বাস যাত্রী ৬৩ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি-ড্রাম ট্রাক-রোড রোলার আরোহী ৫৪ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২২ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ১৫১ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম) ৪৪ জন এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৯৬টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৩টি আঞ্চলিক সড়কে, ৫৯টি গ্রামীণ সড়কে, ৮৭টি শহরের সড়কে এবং ৪টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার ১৬৭টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩০৬টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১২৪টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৭৬টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৬টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ভোরে ৫ শতাংশ, সকালে ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ, দুপুরে ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ, বিকালে ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৮ দশমিক ৮৫ এবং রাতে ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ২৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২০২টি দুর্ঘটনায় ১৮৭ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৭টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ১১টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি উল্লেখযোগ্য। দুর্ঘটনা রোধে ১০টি সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এর মধ্যে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি রয়েছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.