জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীর প্রাক্কালে রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের কাজ নতুন গতি পেয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হলেও, এই উচ্চকক্ষ কীভাবে গঠিত হবে—সেই পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য এখনো রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন পেশার ৬০ বিশিষ্ট নাগরিক এক যৌথ বিবৃতিতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক উচ্চকক্ষ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ভোটের অনুপাতে গঠিত উচ্চকক্ষ (PR Upper House) রাষ্ট্রক্ষমতার ভারসাম্য, সরকারের জবাবদিহিতা এবং একটি আলোচনামূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সোমবার (৩০ জুন) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, যদি উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনও নিম্নকক্ষের মতো একচেটিয়া হয়, তবে দ্বিকক্ষ সংসদের কোনো অর্থ থাকবে না। বরং ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে গঠিত একটি উচ্চকক্ষ সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে এবং ছোট দলগুলোও যথাযথ প্রতিনিধিত্ব পাবে।
তাঁরা আরও বলেন, “আমরা চাই উচ্চকক্ষের ক্ষমতা সংবিধান সংশোধন এবং যুদ্ধ ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে সীমিত রাখা হোক। কিন্তু একইসাথে এটিকে একটি পর্যালোচনা, নিরীক্ষা ও তদারকি সংস্থা হিসেবে কার্যকর করা হোক, যা সরকারের সিদ্ধান্ত ও আইনসমূহ যাচাই করবে।”
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তাঁদের জোরালো আহ্বান—এই প্রস্তাবটি যেন জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং একটি কার্যকর PR ভিত্তিক উচ্চকক্ষ নিশ্চিত করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমাদের গণতন্ত্র বারবার বিপন্ন হয়েছে ‘winner-takes-all’ সংস্কৃতির কারণে। এখন সময় এসেছে একটি আলোচনাভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংসদীয় ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার, যা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনাকে বাস্তবায়ন করবে।”
স্বাক্ষরকারী নাগরিকদের মধ্যে রয়েছেন:
মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, শিক্ষক ও রাজনৈতিক গবেষক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, আইনজীবী মানজুর আল মতিন, উদ্যোক্তা ও সংগঠক ফাহিম মাশরুর, অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান, অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠক ফারাহ কবির, শিক্ষক ড. রুশাদ ফরীদি, ছাত্রনেত্রী উমামা ফাতেমা, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি ফারজানা, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক ড. অতনু রব্বানী, প্রকাশক মাহরুখ মহিউদ্দীন, উন্নয়ন গবেষক ড. ইমরান মতিন, সমাজ বিশ্লেষক ড. মির্জা হাসান, অর্থনীতিবিদ ও নীতি গবেষক ড. অনন্য রায়হান, সম্পাদক ও লেখক জাফর সোবহান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সফিকুর রহমান, সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, চিকিৎসক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. রুমি আহমেদ, স্থপতি আমিনুল ইসলাম ইমন, চিকিৎসক গবেষণাবিদ শাহেদ ইকবাল, আইনজীবী এহতেশামুল হক, আইনজীবী ব্যারিস্টার মুশতাক আহমেদ, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, লেখক ও প্রকৌশলী সুবাইল বিন আলম, উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ইসলামুল হক, গবেষক ও শিক্ষক সেলিনা আজিজ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, গবেষক আসিফ বিন আলী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক রন্টি চৌধুরী, আইনজীবী সাইফ শাহ মোহাম্মদ, আইনজীবী মাসুদ রানা, ছাত্র সংগঠক নাজিফা জান্নাত, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট সাদিক মাহবুব ইসলাম, আইটি উদ্যোক্তা আহমদ ইসলাম মুকসিত, প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন, উদ্যোক্তা কায়সার চৌধুরী, আইনবিদ ও লেখক মিল্লাত হোসেন, বিনিয়োগ পরামর্শক মোহাম্মদ মিয়া রাদ, মেরিনার ক্যাপ্টেন এ কে এম মোতাহারুল ইসলাম, প্রযুক্তি বিষয়ক লেখক রকিবুল হাসান, উন্নয়ন গবেষক রুবায়েত সারওয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অধ্যাপক নাঈম মোহায়মেন, উদ্যোক্তা প্রকাশ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ গালিব ইবনে আনোয়ারুল আজীম, উদ্যোক্তা দিদার ভূঁইয়া, আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, উদ্যোক্তা মাহবুব সাদিক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ খালেদ শফিউল্লাহ, গবেষক তারিকুল ইসলাম অনিক, প্রকৌশলী রনি মন্ডল, উদ্যোক্তা হাসান মাহমুদ, উদ্যোক্তা সৈয়দ আমীন, প্রকৌশলী মাহমুদুল খান আপেল, প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার, উদ্যোক্তা তারেক হোসেন, অর্থনীতি গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট হুমায়ুন কবির।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.