রাতভর রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে ইউক্রেনের এক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালক নিহত হয়েছেন। রবিবার (২৯ জুন) ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় শত শত ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। যুদ্ধের চতুর্থ বছরে মস্কো এই ধরনের আক্রমণ আরও জোরদার করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার হামলায় ইউক্রেনের বাড়িঘর ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আরও বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেন জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তৃতীয় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে দেশটি। যদিও কিয়েভ সরকার এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি তারা কতগুলো এফ-১৬ পরিচালনা করছে, তবে এই মার্কিন নির্মিত যুদ্ধবিমানগুলো ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, যতদিন রাশিয়ার কাছে ব্যাপক আক্রমণের সক্ষমতা থাকবে, ততদিন তারা থামবে না। তিনি জানান, গত সপ্তাহেই রাশিয়া ১১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র, ১ হাজার ২৭০টির বেশি ড্রোন এবং প্রায় ১ হাজার ১০০টি গ্লাইড বোমা ব্যবহার করেছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত রাতে রাশিয়া ৪৭৭টি ড্রোন এবং ৬০টি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী ২১১টি ড্রোন এবং ৩৮টি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া কয়েক দিন পর পরই ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে এমন আক্রমণ চালাচ্ছে, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং বহু সাধারণ নাগরিক নিহত হচ্ছেন। সর্বশেষ হামলার সময় লভিভ, পোলটাভা, মিকোলাইভ, ডিনিপ্রোপেত্রোভস্ক, চেরকাশি ও ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গভর্নররা।
ইউক্রেন বলছে, সাম্প্রতিক রাশিয়ার হামলাগুলো আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরছে যে, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ‘প্যাট্রিয়ট’ মিসাইল সিস্টেম বিক্রির অনুরোধ করেছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিনতে প্রস্তুত এবং এটি পেতে তিনি মার্কিন নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং ইউরোপসহ মিত্রদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছেন।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যে বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ইউক্রেন তার ইউরোপীয় মিত্র বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে থেকে প্রায় ৫০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইতোমধ্যে হাতে পেয়েছে এবং আরও ৪০টির মতো বিমান পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.