ইরানে মার্কিন সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা ইরানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধে লিপ্ত নয়। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, এই সংঘাত ইরানের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে।
রবিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে ‘অত্যন্ত সফল’ হামলা চালানোর ঘোষণা দেন, যা বিশ্বজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করে।
এই অভিযানকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে অভিহিত করে ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করে দিয়েছি এবং আমি মনে করি, এই কর্মসূচিকে আমরা বেশ অনেকটা পিছিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি চায়, তবে সেই শান্তি ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত থাকার শর্তে। তার কথায়, ‘আমরা কূটনীতির পথ রুদ্ধ করিনি। বরং ইরানিরাই কখনোই কূটনীতিকে সত্যিকারের সুযোগ দেয়নি।’
ইরান প্রতিশোধ নিলে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি সতর্ক করে দেন, ‘ইরানিরা যদি মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা করে এই সংঘাতকে আরও বড় করতে চায়, তবে তা হবে একটি বিপর্যয়কর ভুল।’
তবে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে জড়ানোর কোনো আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভ্যান্স বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত বা সেখানে সরাসরি সেনা পাঠানোর কোনো ইচ্ছা নেই।’ তিনি পুনরায় স্পষ্ট করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরকার পরিবর্তনের কোনো চেষ্টা করছে না। তাদের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করে একটি দীর্ঘমেয়াদী নিষ্পত্তির জন্য আলোচনায় বসা।
এদিকে, মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইরান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা এই আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি তুলেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের একাধিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালালে বর্তমান সংঘাতের সূত্রপাত হয়। এর জবাবে তেহরানও পাল্টা হামলা চালায়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.