সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় তাকে উত্তরার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি।
এদিকে রোববার দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকেও আসামী করা হয়। মামলায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগ আনা হয়।
নুরুল হুদার গ্রেফতারের সঙ্গে এই মামলার সম্পর্ক থেকে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আওয়ালকে অনেক দিন আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় কিছু লোক মব সৃষ্টি করে নুরুল হুদাকে বাসা থেকে বের করে আনে। কোনো এক বা একাধিক দুষ্কৃতিকারী তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। এরপর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কে এম নুরুল হুদা ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সদস্য তথা নির্বাচন কমিশনার ছিলেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।
ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনের নাম হয় ‘নিশিরাতের নির্বাচন’।
এদিকে নুরুল হুদাকে গ্রেফতারের সময় তার গলায় জুতার মালা পড়ানোসহ নানা অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দেয়। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, কেউ কেউ নূরুল হুদার দিকে ডিম ছুড়ে মারছেন এবং নানাভাবে তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে। নেটিজেনদের ভাষ্য, নুরুল হুদা অপরাধ করে থাকলে আদালত বিচার করে শাস্তি দেবেন। কিন্তু এভাবে কাউকে হেনস্থা করার সুযোগ নেই।
এ ঘটনায় রাতে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কে এম নুরুল হুদার বাসায় ঢুকে ‘মব’ তৈরি এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.