ওয়াশিংটন অনুশোচনা করানোর মতো হামলার হুমকি ইরানের বিপ্লবী বাহিনীর

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বা বিপ্লবী বাহিনী বলেছে, তারা ওয়াশিংটনকে এমনভাবে পাল্টা জবাব দেবে যে, তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হবে। আমেরিকার ওই হামলা ‘প্রকাশ্য অপরাধ’ ও ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’।

একটি বিবৃতিতে এই বাহিনীটি বলেছে, ‘সন্ত্রাসী আমেরিকা কর্তৃক আজকের আগ্রাসী আচরণ ইরানকে এমন পথে ঠেলে দিয়েছে- যার ফলে ইরানকে বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার হিসাবে অন্যদের চিন্তা ও আক্রমণকারীদের হিসাবের বাইরে বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।’

এতে বলা হয়েছে, এই ভূমিতে হামলার এমন জবাব দেওয়া হবে, যাতে তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হবে। মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটি ও সেখানকার সদস্যরা ‘নাজুক’ অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কীভাবে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে, তার বিস্তারিত প্রকাশ করেনি বিপ্লবী বাহিনী।

এর আগে গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়ায় তাহলে তার জবাব দেওয়া হবে। আমেরিকানরা যেন বুঝে নেয়, যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ তাদের এমন ক্ষতি করবে যা কখনো পূরণ করা যাবে না।

শনিবার ইরানের আঞ্চলিক মিত্র ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী হুমকি দিয়ে বলেছে যে, যদি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে তারা লোহিত সাগর দিয়ে চলা মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা চালাবে। এই ধরনের বক্তব্যের পর ধারণা করা যায় যে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাটি ও নাগরিকরা এখন সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে।

ইরান বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে? এর জবাব হলো-

– তারা চাইলে উপসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ অথবা ঘাঁটিতে আক্রমণ করতে পারে। যা উপসাগর থেকে তেলের প্রবাহ ব্যাহত করতে পারে এবং তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তাদের সামরিক পদক্ষেপ আপাতত শেষ হয়েছে। এবং তারা তেহরানের শাসনব্যবস্থা উৎখাত করতে চায় না।

এমন বার্তা হয়তো ইরানকে আরও সংযত প্রতিক্রিয়া জানাতে উৎসাহিত করতে পারে।

সম্ভবত আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে এমনভাবে আক্রমণ করা হতে পারে, যাতে উল্লেখযোগ্য হতাহতের ঘটনা না ঘটে।

২০২০ সালে ট্রাম্প ইরানের বিপ্লবী গার্ড কোরের কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার পর ইরান আগেও এই পথ অনুসরণ করেছিল।

এখানে লক্ষণীয় যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারও হুমকি দিয়েছেন যে, ইরান যদি প্রতিশোধ নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী সামরিক জবাব দেবে।

যে কারণে এখন মধ্যপ্রাচ্যে একটাই আলোচনা- ইরানে মার্কিন হামলা কী এই সংঘাতের সমাপ্তির সূচনা, নাকি যুদ্ধের আরো রক্তাক্ত পর্বের অপেক্ষা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.