আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে লিফটকে মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং এর ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ এলিভেটর, এসকেলেটর অ্যান্ড লিফট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলিয়া)।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি এমদাদ উর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আলম উজ্জ্বল। এছাড়া সংগঠনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিফটকে বাণিজ্যিক পণ্য ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর, শুল্ক বৃদ্ধি সংবাদ সম্মেলনে বেলিয়া জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত লিফট মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে আমদানি করা হতো। মূলধনি যন্ত্রপাতিতে আমদানি শুল্ক থাকে ন্যূনতম। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে সরকার লিফটকে বাণিজ্যিক পণ্য ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করে, যার ফলে এর শুল্ক-কর অনেক বেড়ে যায়। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেলিয়া প্রতিবাদ জানালেও সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বেলিয়ার নেতারা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেও লিফটকে বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে রাখা হয়েছে এবং এর ওপর শুল্ক-কর আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে লিফট খাতে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর এবং নতুন ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট শুল্ক-কর দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশ। এটি গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি।
সংগঠনের সভাপতি এমদাদ উর রহমান বলেন, লিফট বিক্রি ও চুক্তি সম্পাদনের পর উৎপাদন ও আমদানি করা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় লাগে। চলতি জুন মাসের আগে লিফটের ক্রয়াদেশ, ঋণপত্র খোলা, প্রস্তুত অবস্থায়, জাহাজীকরণ অবস্থায় এবং বন্দরে শুল্কায়ন পর্যায়ে সহস্রাধিক লিফট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই লিফটগুলো ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ শুল্কহারে বিক্রি হয়েছে, কিন্তু এখন সেগুলোর জন্য নতুন ৪৩ শতাংশ হারে শুল্ক-কর দিতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। এতে ক্রেতারা পণ্যটি পাওয়ার নিশ্চয়তা হারাবেন। তাই জুনের আগে লিফটগুলোর জন্য পূর্ববর্তী শুল্ক-কর হার অনুযায়ী শুল্ক-কর ধার্য করার দাবি জানান তিনি।
বেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আলম উজ্জ্বল বলেন, দেশের আবাসন খাতের উন্নয়নে লিফট একটি অপরিহার্য উপকরণ। ২০২৫-২৬ বাজেটে অতিরিক্ত শুল্ক-কর আরোপ হলে পণ্যটির দাম অনেক বেড়ে যাবে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। এতে সার্বিকভাবে আবাসন খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে এবং এই খাতে যুক্ত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই, প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের আগেই লিফটের ওপর বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহার এবং একে আগের মতো মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে গণ্য করার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আমদানি পর্যায়ে লিফটের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য নির্ধারণের সময় অতিরিক্ত মূল্যায়ন করা হচ্ছে, ফলে অধিক পরিমাণ শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। লিফটের নির্মাণ সামগ্রীর ৬৫ শতাংশ অংশই লোহা ও স্টিলের সংমিশ্রণে তৈরি, ২৫ শতাংশ কংক্রিটের ব্লক এবং ১০ শতাংশ ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি। লোহা ও স্টিলের মূল্য কেজি প্রতি ১ ডলারের নিচে, এবং কংক্রিট ব্লকের মূল্য অত্যন্ত নগণ্য। তবে, বিগত সরকারের সময় লিফটের মূল্য কেজি প্রতি ৩ ডলার হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা বাস্তবসম্মত হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.