চীনা ক্ষেপণাস্ত্রে গুদাম ভরবে পাকিস্তান, বাজেট প্রকাশ

এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে চরম সংঘাতময় দীর্ঘ ১৯টি দিন পার করেছে ভারত-পাকিস্তান। দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই তলানিতে নেমে গেছে যে, পরিস্থিতি অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেলেও চাপা উত্তেজনা বিরাজমান এখনও। ভবিষ্যতে এমন যুদ্ধ পরিস্থিতি উপস্থিত হওয়ার আশঙ্কায় একদিকে ভারত যেমন নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে; অন্যদিকে পাকিস্তানও উঠে পড়ে লেগেছে নিজেদের সামরিক শক্তি আরও সমৃদ্ধ করতে।

সংঘাতকালে ভারতের অপারেশন সিঁদুরের জবাব যে সফলতার সঙ্গে দিয়েছে পাকিস্তান, তার অনেকটা কৃতিত্বই চীনের। মূলত, চীনা প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেই ভারতের তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান; ধ্বংস হয়েছে ভারতের আরও তিনটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানও। চীনা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেই ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের গুদামে সফল হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে তারা। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই চীনা ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে তাদের।

মঙ্গলবার (১০ জুন) ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রতিরক্ষাখাতে বরাদ্দ এক লাফে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তান।

নতুন অর্থবছরে দেশটির মোট বাজেটের পরিমাণ ৬২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ২৯ বিলিয়ন ডলারই আবার ব্যয় হবে ঋণ পরিশোধে। প্রকৃত ব্যয়যোগ্য বাকি ৩৩ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৯ বিলিয়ন ডলারই রাখা হয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের জন্য। আর এই ৯ বিলিয়ন ডলারের প্রায় সবটাই পাকিস্তান ব্যয় করবে চীনা প্রযুক্তিতে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, চীনের তৈরি এইচকিউ-১৯ ক্ষেপণাস্ত্রসহ বেশ কিছু অস্ত্র কিনবে পাকিস্তান, যা মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত ভারতের সঙ্গে ১৯ দিনের ভয়াবহ সংঘাত থেকে পাওয়া শিক্ষাই পাকিস্তানকে প্রতিরক্ষাখাতকে এমন গুরুত্ব দিতে বাধ্য করল। দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, কয়েক দশকের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষই প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির অনুঘটক। ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার বিষয়টি জনসমর্থনও পাচ্ছে, যা পাকিস্তান সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার রাজনৈতিক সুযোগ দিয়েছে।

এমনিতেই অর্থনৈতিক সক্ষমতায় শোচনীয় অবস্থায় আছে পাকিস্তান। একদিকে আইএমএফের ঋণ পরিশোধের চাপ, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি; এমন পরিস্থিতি প্রতিরক্ষাখাতে এমন উচ্চ বরাদ্দের ফলে স্বাভাবিকভাবেই টান পড়ছে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে। এছাড়া, আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে উন্নয়ন ব্যয় কমিয়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে এনেছে পাকিস্তান, যা গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার কম।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.