বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। এই বাজেট চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। তবে সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকা বেশি।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১২ দশমিক ৭ শতাংশ।
সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরেন। এটি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট।
এবারের বাজেটের আকার যে কিছুটা ছোট হবে সে তথ্য আগেই জানিয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হবে। এতে গুরুত্ব পাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়।
তবে আকারে একটু ছোট হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় কিছু কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি গ্রামীণ পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯ শতাংশ। মোট আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আসবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। আর এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব ধরা হচ্ছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় তথা অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে শুধু সুদ পরিশোধ খাতেই ব্যয় হবে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। আর এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার আশা ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা।
ঘোষিত বাজেটে জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে হচ্ছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়ে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জুলাইয়ে নতুন অর্থবছর শুরুর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় ছোট।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.