আরএমজি সেক্টর তথা দেশের অর্থনীতিকে এগিতে নিয়ে যেতে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং তৈরি পোশাক ও বায়িং হাউস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিবিএ একসঙ্গে কাজ করবে।
দুটি সংগঠনের প্রতিটি সদস্য যার যার সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ব্যবসা করবে।ব্যবসার ক্ষেত্রে একে অপরের সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। বিজিএমইএ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ফোরাম জোট ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) নেতারা এসব কথা বলেন।
বিজিএমইএর ২০২৬-২৭ মেয়াদী নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার রাতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ফোরাম জোটের নেতারা। বিজিবিএর কার্যালয়ে এই মতবিনিময় সভায় বিজিবিএর নেতৃবৃন্দ এবং ফোরাম জোটের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফোরাম জোটের প্যানেল লিডার রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের সিইও মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিজিএমইএ ও বিজিবিএ একসঙ্গে কাজ করবে, যার যার মর্যাদা নিয়ে কাজ করবে। এতে দুই সংগঠনের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে, দেশ উপকৃত হবে। বাইং হাউস কত ব্যবসা করল সেটি আমাদের উদ্বেগের বিষয় হতে পারে না; আমরা আমাদের প্রাপ্য সিএম পেলেই হলো। সময়মতো প্রোডাক্ট ডেলিভারি পেলেই হলো।
তিনি বলেন, সবাই শুরুতে বাইং হাউস দিয়েই ব্যবসা শুরু করে। এরপর রফতানিকারক হয়। সুতরাং অতীতকে ভুলে গেলে চলবে না। আমরা পরস্পরকে সম্মান না দিতে পারলে এগোতে পারব না।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, বিজিএমইএর অধীনে ৩০০০ ফ্যাক্টরি। সবাই সঠিক প্রক্রিয়া মেনে সৎভাবে ব্যবসা করছে বিষয়টি তেমন নয়। আবার বায়িং হাউসের সবাই যে, নীতি মেনে ব্যবসা করছে তাও নয়। যখন কোনো সমস্যা হবে তখন ন্যায্যতার ভিত্তিকে সমাধান করা হবে।
বিজিবিএর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, তৈরি পোশাক খাত এগিয়ে নিতে আমরা সবাই কাজ করছি। আমাদের জীবনের মূল্যবান সময়টুকু দিয়ে দিচ্ছি। এর বিনিময়ে বিজিএমইর কাছ থেকে আমরা টাকা-পয়সা চাই না। আমরা চাই বিজিবিএ সদস্যরা মর্যাদাটুকু পাক, যার যার সম্মান নিয়ে ব্যবসা করুক—এমন পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক। বিজিএমইএর সঙ্গে বিজিবিএ যুগপৎভাবে কাজ করে আরএমজি সেক্টরকে এগিয়ে নিতে চায়।
তিনি বলেন, বিজিবিএর ১৬০০ সদস্য। তাদের অনেকেই বিজিএমইএর সদস্য। আগে আমাদের অবহেলা করা হতো। পলিসি মিটিংগুলোতে ডাকা হতো না। আমরা চাই বিজিবিএ সদস্যদের পলিসি মিটিংগুলোতে ডাকা হোক। আমাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হোক।
মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিজিএমইএ ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব নেই। আমাদেরও কিন্তু আপনাদের প্রয়োজন আছে।
বিজিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম সাইফুর রহমান বিজিএমইএর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেকোনো কাজ নেওয়ার আগে যেন বিজিবিএর সদস্যপদ দেখে নেওয়া হয়। যাতে করে ভবিষ্যতে আরবিট্রেশন বা কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে দুপক্ষই সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করতে পারে। তিনি বিজিএমইএ নির্বাচনে প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিজিবিএতে শুধু ভোটই নয়; ব্যবসাও আছে। তাই বিজিবিএ সদস্যদের মর্যাদাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
বিজিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুর রহমান ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন বিজিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ পিন্টু, সেক্রেটারি জাকির হোসেন প্রমুখ।
ফোরাম জোটের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন—সুরমা গার্মেন্টের ফয়সাল সামাদ, নেকসাম সোয়েটারের ড. রশিদ আহমেদ প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন যমুনা ডেনিমস লিমিটেডের ডিরেক্টর সুমাইয়া ইসলাম, এটিএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম, আদিবা অ্যাপারেলস পরিচালনা অংশীদার কাজী মিজানুর রহমান (পিন্টু), এমিটি ডিজাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক খান (বাবলু) প্রমুখ।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ২০২৫-২০২৭ মেয়াদে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন হবে আগামী ৩১ মে। ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচন হবে। এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এক হাজার ৮০৬ জন গার্মেন্ট মালিক।
এতে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ফোরাম প্যানেল ও সম্মিলিত পরিষদ। ফোরাম প্যানেলও নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদে প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.