ভারত সীমান্তে বাড়তি কোনও ব্যবস্থা নেবে না বাংলাদেশ

ভারত ও পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে বিভিন্ন সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে দিল্লি। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে বাড়তি কোনও ব্যবস্থা নেবে না বাংলাদেশ বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।

মঙ্গলবার (৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পরে একথা জানান তিনি।

নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার- তা আমরা করবো। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আছে। আমাদের সঙ্গে ভারতের সে ধরনের উত্তেজনা নেই। আমরা বাড়তি কোনও কিছু করবো না।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে করে আর নতুন রোহিঙ্গা না আসে। এ কথা আমরা খুব জোরের সঙ্গে আরাকান আর্মিকে জানিয়েছি। জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদেরকে যে কয়েকটি কথা আমরা জানিয়েছি সেগুলো হচ্ছে- আরাকানে যে নতুন প্রশাসন তৈরি হচ্ছে, তার সব স্তরে আমরা রোহিঙ্গাদের দেখতে চাই। যদি সেটি তারা না করে, তবে সেটি হবে জাতিগত নিধনের একটি নিদর্শন। এটি আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারি না। আমরা এ কাজটি কখনও করবো না। এই কাজটি যদি তারা না করে, তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়া খুব মুশকিল হবে।

জাতিগত নিধন কোনও অবস্থাতে আমরা মানবো না। এটি আমাদের রেড লাইন জানিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আমরা এ ধরনের জাতিগত নিধন কোনোভাবেই সমর্থন করি না, এটা পৃথিবীর যেকোনও জায়গায় হোক। এটা আরাকান আর্মির জন্য একটি প্রথম পরীক্ষা। আমরা অপেক্ষা করছি এই পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হতে পারছে কিনা।

আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে কী জবাব পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রশ্ন করেছি। জবাব পেলে আমরা বিচার-বিবেচনা করে দেখবো কী ধরনের জবাব পাচ্ছি। এখানে কোনও রাখঢাকা নেই। এটি সরাসরি প্রশ্ন। আপনি জাতিগত নিধনের পক্ষে অথবা বিপক্ষে।

আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের বিষয়ে মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, আমরা সার্বভৌম রাষ্ট্র। যার সঙ্গে ইচ্ছা তার সঙ্গে আমরা কথা বলবো। কে কী বললো. তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা একটি স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়ন করেছি এবং বাস্তবায়ন করছি। মিয়ানমার আরাকান আর্মিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তারাও তো কথা বলছে। তারাতো যুদ্ধবিরতির কথা বলছে। এছাড়া আরেকটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। আমাদের সীমান্তের ওপারে এখন নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির। আমাদের সার্বভৌম সীমান্ত আমাদেরই ব্যবস্থাপনা করতে হবে, রক্ষা করতে হবে, শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। এজন্য ওপারে যেই থাক, তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখবো। মিয়ানমার আর্মি যদি পারে, আসুক তারা সীমান্তের ওপাশে। তাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ ছিল এবং সেটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করুক। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলবো বলে তিনি জানান।

মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে, নিশ্চয়ই আছে। কিছুকাল আগে মিয়ানমারে ভূমিকম্পের সময়ে আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি। তাদের অনুরোধের অপেক্ষা করিনি। তাদের সঙ্গে বাণিজ্য যোগাযোগ আছে। রোহিঙ্গা বিষয়েও তাদের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা আছে। বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। আলাপ আলোচনা চলতেই থাকবে। একটি সমস্যার সমাধান চাইলে সব পক্ষের সঙ্গে একটি যোগাযোগ রাখতে হবে। সেটি না হলে সমাধান করা সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.