বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেব: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাস্তবসম্মত এবং বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেবে। আমাদের প্রধান বিষয়গুলো হলো ব্যয় কমানো এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করা। আমরা আমাদের ব্যয় কমাতে অত্যন্ত সচেতন। আমরা প্রকল্প গ্রহণেও সতর্ক।

ইতালির মিলানে ৫৮তম এডিবি বার্ষিক সভায় এডিবির (দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) জানিয়েছে অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জনে আমরা খুশি। আমরা (এডিবি) জানি, আপনারা (বাংলাদেশ) স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ করতে চলেছেন। আমরা (এডিবি) বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে নজর রাখছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন উল্লেখ করেন যে, ব্যাংকিং খাত এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারে এডিবি বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। এডিবি তাদের বিদ্যমান অবকাঠামো প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাবে এবং পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পগুলোও বাস্তবায়ন করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠককালে এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমরা তাকে জানিয়েছি যে, আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুবই ভালো। ব্যাংকিং এবং এনবিআরসহ আমাদের সকল খাতই ভালো পারফর্ম করেছে।’

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলতমান ঋণ কর্মসূচি চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির সমাধানে এডিবি তাগিদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা বাজেট সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির বিষয়টি আমলে নেয়। তবে আইএমফের শর্ত মানা হবে না। এমনকি আইএমএফ ও এডিবি কেউ বাজেট সহায়তা না দিলেও নিজেদের মতো করে বাজেট দেওয়া হবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। আমরা জানিয়েছি অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। সামষ্টিক অর্থনীতিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অনেক সংস্কার করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ব্যবসা–বাণিজ্য। এ বিষয়ে বেসরকারি খাতকে উৎসাহি করতে বিনিয়োগ সম্মেলন করা হয়েছে। এসব অগ্রগতিতে প্রশংসা করেছে এডিবি।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এডিবি এখন আমাদের অবকাঠামোর উন্নয়নে সহায়তা করছে। এটা তারা করতেই থাকবে। এছাড়া আরও কিছু পাইপলাইনে আছে। আমাদের বাজেট সাপোর্টের বিষয় তাদের যেটা দেওয়ার কথা ছিল সেটা ছাড়ের কথা বলেছি। এক্ষেত্রে তারা আইএমএফের বিষয় জিজ্ঞাসা করেছিল। আমরা তাদের বলেছি যে, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

আইএমএফের কিস্তি ছাড়া বিলম্ব হওয়াতে এডিবির বাজেট সহায়তার কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেট সাপোর্টের বিষয় তারা (আইএমএফ) বিষয়টা দেখে। কারণ, আইএমএফ সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়গুলো দেখে থাকে। এ বিষয় আমরা আলোচনা করছি। আশা করছি, সমাধান হয়ে যাবে। আমরা চট করে আইএমএফের কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করবো না। আইএমএফের অর্থ ছাড়াই অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে। আমরা তো এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট নেইনি। বাজেট সহায়তা পেলেই হই হুল্লোড় পড়ে; যাবে বিষয়টা এমন না। আমরা যদি আইএমএফ ও এডিবির সহায়তা নাও পাই তাও নিজেদের মত করে বাজেট দেবো।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.