গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৪০, প্রাণহানি ছাড়াল সাড়ে ৫২ হাজার

হামাস উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য।
এরই মধ্যে গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা ইতোমধ্যে অনুমোদন পেয়ে গেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যাবিনেটে। পরিকল্পনাটি এখন ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ ক্যাবিনেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, যা কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এদিকে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এতে করে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫২ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে প্রাণহানির সংখ্যা।
রোববার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে।
আরেক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ৪৮ ঘন্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, সঙ্গে আহত হয়েছেন তিনশোর বেশি মানুষ। এর ফলে, বিগত প্রায় ১৭ মাসে দখলদার বাহিনীর হামলা-অভিযানে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪শ’রও বেশি মানুষ আহত হয়েছে উপত্যকাটিতে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় ভয়াবহ এক অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৬ হাজার ৩২৫ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে মিশর এবং কাতার। তবে, ইসরায়েল ও হামাস কেউই নিজেদের মূল দাবি থেকে সরে আসেনি। কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে আসছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.