জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ৫ আগস্ট জনগণ লালকার্ড দেখিয়েছে। তাদের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না। আ.লীগ কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়, এটি সন্ত্রাসী সংগঠন। হাসিনার ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। নারী কমিশনের ইসলামবিরোধী ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।
শনিবার (৩ মে) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শহীদদের রক্তের ওপর পারা দিয়ে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আসবে না। এই সংস্কার আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আপনারা ভুলে গেলে চলবে না, আওয়ামী লীগ কোন রাজনৈতিক দল নয়। একাত্তর পরবর্তী সময়ে আপনারা দেখেছেন, শেখ মুজিব সর্বপ্রথম বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছেন। এই বাকশালি দিয়ে ৩০ হাজার জাসদকর্মীকে হত্যা করে সারা বাংলাদেশে কসাইতন্ত্র কায়েম করেছে। তাদের লুটপাটের কারণে ৭৪ সালে দুর্ভিক্ষে ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে।
সমাবেশে তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত কিছুদিন আগে বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কি, করবে না সেই সিদ্ধান্ত নাকি আওয়ামী লীগের’। আপনি ভুলে যাবেন না, আমরা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি, করবে না, নির্বাচনে আসবে কি, আসবে না, এই সিদ্ধান্ত নেব আমরা। আওয়ামী লীগ মারা গেছে বাংলাদেশে, জানাজা হয়েছে দিল্লিতে।
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না- মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতার আট মাস পরে যেসব দাবিতে আজ আমরা এখানে জমায়েত হয়েছি, সেটা আমাদের জন্য গর্বের কিছু নয়, বরং এটি আমাদের জন্য লজ্জার। ৫ আগস্ট সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে, হাসিনার পুনর্বাসনের প্রতি সারা বাংলাদেশের মানুষ রেড কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। ৫ আগস্ট আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি, এই ভূখণ্ডে আওয়ামী লীগের আর পুনর্বাসন হবে না। যেই আওয়ামী লীগ আমাদের দাড়ি-টুপিওয়ালা ভাইদের বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে রাস্তায় নামিয়ে এনে হত্যা করেছিল, সেই আওয়ামী লীগের আর পুনর্বাসন হবে না।
এনসিপির এই নেতা বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আট মাস পরে এসে আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক দল, অনেক রাজনীতিবিদ আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়, আওয়ামী লীগ নাকি রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দল নিয়ে সিদ্ধান্তে আসার এখতিয়ার নাকি আমাদের নেই। শহীদদের রক্তের ওপর পা দিয়ে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আসবে না। এই সংস্কার আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন হেফাজতের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। আজকের মহাসমাবেশের মূল দাবি চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে – অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো রয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.