৮২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম স্টিলস, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং রাজধানীর ধানমন্ডির চারতলা দালানসহ ৪১ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিলামের ঘোষণা দেয় ব্যাংকটির চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এস আলম স্টিলস লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের নামে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সুদ ও লভ্যাংশসহ মোট ৮১ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৪৩০ টাকা ৯২ পয়সা পাওনা রয়েছে। অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর ১২ (৩) ধারা অনুযায়ী ওই সম্পত্তি বিক্রির লক্ষ্যে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ঋণগ্রহীতাদের তালিকায় রয়েছেন- এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল আলম মাসুদ, চেয়ারম্যান মো. আবদুস সামাদ, শেয়ারহোল্ডার মো. রাশেদুল আলম, ফারজানা পারভীন, মো. আবদুল্লাহ হাসান, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ওসমান গনি, শওকত সাদেক হোসেন ও শাহেল্লা রশিদসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
এর আগে, চলতি মাসের ২০ এপ্রিল ৯৯৪৮ কোটি টাকা আদায়ে এস আলম গ্রুপের একটি চিনিকলসহ প্রায় ১১ একর জমি এবং ২৭ এপ্রিল ২১৮০ কোটি টাকা আদায়ে একটি স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোজ্যতেল কারখানা ও ১১৪৯ শতাংশ জমি নিলামে তোলে ইসলামী ব্যাংক।
আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখল করে নেয় এস আলম গ্রুপ। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে এক লাখ কোটি টাকার বেশি তুলে নেয় গ্রুপটি।
চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর গ্রুপটি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক দখল করে নেয়। তবে সব মিলিয়ে তারা একসঙ্গে ৮টি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। অন্য ব্যাংকগুলো হলো ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেয় গ্রুপটি। সব মিলিয়ে এস আলম গ্রুপের হাতিয়ে নেওয়ার টাকার পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.