থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও সমীকরণ মেলাতে না পারায় বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া হলো না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও রান রেটে এগিয়ে থাকায় ভারতে অনুষ্ঠিতে হতে যাওয়া নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে টপকে বিশ্বকাপে যেতে চাইলে ১০ ওভারে ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। হেইলি ম্যাথিউসের ৭০ রানের সঙ্গে শিনিলে হেনরির ১৭ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংসের পরও কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা।
ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে খেলবে ৮ দল। এর মধ্যে স্বাগতিক ভারতসহ ৬ দল সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পায়। বাকি ৫ দল হলো- অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৫ ম্যাচে জিতেই বিশ্বকাপের টিকিট পায় বাছাইপর্বের স্বাগতিক পাকিস্তান। অন্য টিকিট হাতে পেলেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।
এর আগে জিততে পারলেই ভারত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাত উইকেটে হারে বাংলাদেশ। তবে এই হারেই অবশ্য বিশ্বকাপে খেলা অনিশ্চিত হয়ে যায়নি বাঘিনীদের জন্য। ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে হলে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও থাইল্যান্ডের ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
পাঁচ ম্যাচে তিনটি জয় ও ছয় পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় এখন দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ। দলটির রান রেট ০.৬৩৯। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে হারা থাইল্যান্ড যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারে তাহলে বাছাইপর্বের ফাইনালে পৌঁছাবে বাংলাদেশ ও পাঁচ ম্যাচ জিতে শীর্ষে থাকা পাকিস্তান। আর থাইল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে বাছাইপর্বের ফাইনালে পৌঁছাবে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে রানরেটও। চার ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জিতে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলটির রান রেট -০.২৮৩। বাছাইপর্বের ফাইনালে খেলা দুই দলই ভারত বিশ্বকাপে খেলবে।
এ দিন আগে ব্যাটিং করতে নেমে ধুঁকেছে বাঘিনীরা। রিতু মনির ৪৮ এবং ফাহিমা খাতুনের অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংসে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান করে বাংলাদেশ নারী দল। তিন উইকেট হারিয়ে ৬২ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় পাকিস্তান। ৯৩ বলে ৬৯ রান করেন মুনিবা আলী। তিনে নামা সিদরা আমিন করেন ৫২ বলে ৩৭ রান। আলিয়া রিয়াজ ৬৫ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মারুফা আক্তার, নাহিদা আক্তার ও রাবেয়া খান।
শনিবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান ফারজানা হক। তাকে বোল্ড করেন ফাতিমা সানা। শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার আগেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগ্রেসরা। দিলারা আক্তার ১৪ বলে ১৩ রান করে সাদিয়া ইকবালের শিকার হন। গুরুত্বপূর্ণ দিনে জ্যোতি ছয় বলে এক রান করে ফাতিমা সানার লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন। ২১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর শারমিন আক্তার ও রিতু মিলে চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। ৪৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৬৫ রানে ৪৭ বলে ২৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান শারমিন।
তারপর নাহিদা আক্তারের সঙ্গেও ৪৪ রানের জুটি গড়েন রিতু। ৫১ বলে ১৯ রান করা নাহিদাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন রামিন শামিম। ভালো ব্যাটিং করলেও এ দিন হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি রিতুর। হাফ সেঞ্চুরির ঠিক দুই রান আগে থাকা অবস্থায় নাশরা সান্ধুকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন রিতু। এরপর ফাহিমা খাতুনের নৈপুণ্যে দেড়শ পেরিয়ে দুইশ’র কাছাকাছি যায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি উইকেট নেন সাদিয়া। দুটি করে উইকেট নেন ফাতিমা ও ডায়ানা বেগ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.