অতিরিক্ত যাচাই প্রক্রিয়ার ফলে মার্কিন স্টাডি ভিসা পেতে বাড়বে বিলম্ব: মঈন চৌধুরী

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের এটর্নী এবং ইউএসএ ইমিগ্র্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন মঈন চৌধুরী বলেছেন অতিরিক্ত প্রশাসনিক যাচাই প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে স্টাডি ভিসা প্রসেসিংয়ে দীর্ঘ বিলম্বের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সময়মতো আবেদন ও আইনগত সহায়তা নেয়া জরুরি।

তিনি বলেন, ঢাকা তে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে এফ-১ ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ওয়ার্ক লোড বৃদ্ধির কারণে অপেক্ষার সময় দিন দিন বাড়ছে।

রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত আমেরিকার বর্তমান কঠিন ইমিগ্রেশন নীতি ; বাংলাদেশীদের উপর প্রভাব ও করনীয় শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

অননুমোদিত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে মঈন চৌধুরী বলেন, ইউএস ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) বাংলাদেশি অননুমোদিত অভিবাসীদের শনাক্ত করে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেবে। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেকটিকাটে অননুমোদিত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কূটনৈতিক পর্যায়ে মর্যাদাপূর্ণ ফেরত নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

প্রবেশদ্বারে জিজ্ঞাসা কঠোর হচ্ছে জানিয়ে মার্কিন আদালতের এই এটর্নী জানান, গ্রিন কার্ড ও অন্যান্য ভিসা হোল্ডারদের জন্য বিমানবন্দরে কঠোর জিজ্ঞাসা চালু হয়েছে। বছরে দশ মাসের বেশি সময় বিদেশে অবস্থান করলে স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা বাতিল হতে পারে।

“যদি আপনি বছরে দশ মাসের বেশি সময় বিদেশে থাকেন, তাহলে আপনার গ্রিন কার্ড বাতিলের ঝুঁকি আছে,” বলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।

পারিবারিক এবং কর্মসংস্থানভিত্তিক ভিসা নিয়ে তিনি বলেন, কঠোর তদন্ত এবং সীমিত সাক্ষাৎ নির্ধারণের কারণে পারিবারিক পুনর্মিলন ও H-1B/H-2B কর্ম ভিসার ব্যাকলগ বৃদ্ধি পেয়েছে।  আবেদনকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে প্রতীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আমি সকল বাংলাদেশি নাগরিককে উপদেশ দিচ্ছি-আপনার কাগজপত্র সবসময় আপডেট রাখুন, দীর্ঘকাল বিদেশে না থাকুন, এবং পরিবর্তিত নিয়মাবলী বুঝতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সরকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে নিয়মিত আলোচনায় অংশ নিয়ে ফেরতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মর্যাদাপূর্ণ ও দ্রুত পরিচয় যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা বাধার মুখোমুখি হলে কানাডা, যুক্তরাজ্য বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে শিক্ষাবিদ ও কর্মী ভিসার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখুন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতি বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আইনগত প্রস্তুতি, কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সম্প্রদায়ের সমর্থনই ভবিষ্যতে তাদের অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

স্যোসাল মিডিয়া এবং ইসরায়েল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মঈন চৌধুরী বলেন, ইসরায়েল-গাজা ইস্যুতে অনেকেই এখন আমেরিকার বিরুদ্ধে আপনার স্যোসাল মিডিয়া একাউন্টে পোস্ট করছেন। যা আপনার ভিসা পেতে প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারে। আমেরিকা মনে করে আপনি তার দেশকে পছন্দ করেন না তবে কি দরকার সেই দেশে আপনার যাওয়ার।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে অননুমোদিত অভিবাসীদের প্রেরণ এবং সকল ভিসা ক্যাটেগরিতে কড়া তদন্ত কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়ার মূল লক্ষ্য হলো ‘সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বিদ্যমান অভিবাসন আইন কার্যকর করা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.