চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুনের ঘটনা নিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান বলেছেন, এ ঘটনায় তদন্ত হবে এবং যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এটাও খতিয়ে দেখছি যে, আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের কোনো ঘাটতি ছিল কি না। সেটাও অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে এবং যদি সেরকম কিছু পাওয়া যায়, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোবিবার (১৩ এপ্রিল) রমনা বটমূলে ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উৎসব উদযাপনে র্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাব ডিজি বলেন, নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা এই অনুষ্ঠানটি উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করব। এ জন্য র্যাব ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের মোটরসাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। আমরা অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সমন্বয় রেখে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও জনপ্রতিনিধিসহ আপামর জনগণের সঙ্গে সমন্বয় করে এই অনুষ্ঠানে যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করা যায়, তার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তিনি জানান, সারাদেশে র্যাবের ২২৪টি পিকআপ টহল ও ১২২টি মোটরসাইকেল টহল চলবে। এ ছাড়া, সাদা পোশাকে ৪১৩ জনসহ সর্বমোট দুই হাজার ৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। আমরা সাইবার ওয়ার্ল্ডেও মনিটর করছি। যাতে সাইবার ওয়ার্ল্ডে কেউ এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনো প্রকার অপপ্রচার চালাতে না পারে।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ঢাকা শহরে এই অনুষ্ঠান আজকে থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ একটি ব্যান্ড শো আছে। আগামীকাল সকাল থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান হবে। মূল অনুষ্ঠান হবে রমনা বটমূলে। এরপরে শোভাযাত্রা আছে। চারুকলা আনন্দ শোভাযাত্রা করবে। রবীন্দ্র সরোবরেও দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আছে। মানিক অ্যাভিনিউতে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আছে। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়।
আয়োজনে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় বিশেষ নজর রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন প্রকার ইভটিজিং যেন না হয়, সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকবে। সুন্দর আয়োজন সম্পন্ন করতে সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখনও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, এমনকি পূজা হবে কি না, এ নিয়েও সংশয় ছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে আশ্বস্ত করি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর খুব সুন্দরভাবে এই পূজা উৎসবটি সম্পন্ন হয়েছে। এরপর যতগুলো অনুষ্ঠান হয়েছে, যেমন: বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, রমজান এবং সর্বশেষ ঈদ, প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার বিষয় এসেছে। আমরা আশ্বস্ত করেছিলাম, আমরা ইনশাআল্লাহ নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হব এবং আমরা সেইভাবেই প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। পূর্ববর্তী যেকোনো বছরের তুলনায় এবার সব অনুষ্ঠান নিরাপত্তার দিক দিয়ে, আনন্দ-উৎসবের দিক দিয়ে সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই ধারাবাহিকতায় আমরা নববর্ষের অনুষ্ঠানেও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশাবাদী।
ভেন্যুর নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তায় আমাদের মোটরসাইকেল টহল, গাড়ির টহল থাকবে। ভেন্যুটি আমরা সুইপিং করব, অলরেডি সুইপিং শুরু হয়েছে। একবার করেছি এবং চূড়ান্তভাবে অনুষ্ঠান শুরুর আগে আগে চূড়ান্তভাবে করা হবে। আমাদের ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিস্পোজাল টিম আছে- সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা হবে না বলে আমি আশাবাদী।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.