সরকার চলতি মাসের শেষ নাগাদ ‘সাইবার সেফটি অধ্যাদেশ’ গেজেট আকারে প্রকাশ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টিতে ডিজিটাল অর্থনীতি’ শীর্ষক উপস্থাপনায় এই মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সিটি ব্যাংক এন. এ.-এর কান্ট্রি অফিসার মো. মইনুল হক।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘আমরা সাইবার সেফটি অধ্যাদেশ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে কাজ করছি। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা সব উদ্বেগের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছি। তাই আশা করছি, চলতি মাসের শেষ নাগাদ আমরা একটি নতুন সাইবার সেফটি অধ্যাদেশ প্রণয়ন করতে পারবো।’
ইপস্থথাপনা অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি : নীতি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, সিটি এশিয়া সাউথ পাবলিক সেক্টর সলিউশনস’র প্রধান রোহিত জামওয়াল, মেটা’র বাংলাদেশ ও নেপালের পাবলিক পলিসি প্রধান রুজান সরওয়ার, গ্রামোফোন’র সিএফও অটো ম্যাগনে রিসবাক, আন্তর্জাতিক জননীতি ও সরকার সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক ইনফান ঝাং, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেব দুলাল রায়।
আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন সিটি ব্যাংক এন. এ.বাংলাদেশের ট্রেজারি ও ট্রেড সলিউশনস বিভাগের পরিচালক ও প্রধান মোহাম্মদ এ. আখের। ফয়েজ আহমদ ব্যবসায়িক পরিবেশে প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ব্যবসাগুলোকে সমাজের সমস্যাগুলোর সমাধানে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে।
সিটি ব্যাংক এন. এ.-এর কান্ট্রি অফিসার মইনুল হক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় ডিজিটাল অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে এটি ব্যবসা চালু রেখেছে, দূর থেকে কাজের সুযোগ দিয়েছে, ই-কমার্সকে শক্তিশালী করেছে এবং মানুষকে যুক্ত রেখেছে যখন প্রচলিত কাঠামোগুলো ব্যাহত হয়েছিল। এটি শুধু বিকল্প নয়, বরং মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল।’
মইনুল হক বলেন, আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রান্তে একটি যুগ যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, এআর ও ভিআর, ৩ডি প্রিন্টিং, বিগ ডেটা, ব্লকচেইন, বায়োটেকনোলজি, ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি, ইন্টারনেট অফ থিংস এবং রোবোটিক্সের দ্বারা সংজ্ঞায়িত। এই প্রযুক্তিগুলো শিল্প পরিবর্তন, প্রচলিত মডেলগুলোকে চ্যালেঞ্জ এবং কাজ ও জীবনের ধরণকে পুনর্নির্ধারণ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লব একদিকে বিশাল সম্ভাবনা এবং অন্যদিকে বড় দায়িত্ব একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ভবিষ্যতমুখী, স্মার্ট সমাজ গড়ে তোলার সুযোগ। তিনি বলেন, ডিজিটাল রূপান্তরের জাতীয় কৌশলপত্রের খসড়া অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রধান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হাবে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে শীর্ষ ১৫ দেশের মধ্যে স্থান পেতে, ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন দক্ষ আইসিটি পেশাজীবী তৈরি, স্টার্টআপে বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে এবং আইসিটি রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায়। তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে এফডিআই প্রধানত টেক্সটাইল, ব্যাংকিং, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জ্বালানি খাতে কেন্দ্রীভূত ছিল। বর্তমানে ১৭ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগের মধ্যে টেলিকম খাত ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। আমরা যখন অ্যালগরিদম ও অটোমেশনের ভিত্তিতে একটি ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলছি, তখন মনে রাখতে হবে, প্রতিটি কোডের রেখা মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। বাসস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.