যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে বিশ্বের ৪১টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ওপর নানা মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দেশগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মাত্রার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে।
শনিবার (১৫ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর পরিবেশন করেছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্র এবং রয়টার্সের দেখা একটি অভ্যন্তরীণ স্মারকলিপির আলোকে এই রিপোর্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন যে তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে এবং এটি এখনও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সহ প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি।
স্মারকলিপিতে মোট ৪১টি দেশের তালিকা রয়েছে যা তিনটি পৃথক গ্রুপে বিভক্ত।
সম্পূর্ণ ভিসা স্থগিতাদেশ:
রয়টার্সের রিপোর্ট অনুসারে, ১০টি দেশের নাগরিকদের জন্য সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। তালিকার কয়েকটি দেশ গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জর্জরিত, কয়েকটিতে রয়েছে ইসলামী জঙ্গীবাদ, কয়েকটির উপর আবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চলমান। দেশগুলো হচ্ছে-আফগানিস্তান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন।
আংশিক ভিসা স্থগিতাদেশ (পর্যটক, শিক্ষার্থী এবং কিছু অন্যান্য ভিসা প্রভাবিত):
কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে ভিসা স্থগিতাদেশ দেওয়া হতে পারে। এর আওতায় পড়বে ট্যুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা ইত্যাদি। এমন দেশগুলোর মধ্যে আছে-ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার ও দক্ষিণ সুদান।
শর্ত পূরণ না হলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে:
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিছু দেশের উপর সাময়িকভাবে ভিসা স্থগিতাদেশ দেওয়া হতে পারে। এসব দেশ ভিসা প্রক্রিয়ার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় কিছু সমস্যা রয়েছে। দেশগুলো যদি ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ঘাটতি দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হবে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে-অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেলারুশ, বেনিন, ভুটান, বুর্কিনা ফাসো, কেপ ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, চাদ, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র,
ডোমিনিকা, নিরক্ষীয় গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, পাকিস্তান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোম ও প্রিন্সিপে, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, তুর্কমেনিস্তান ও ভানুয়াতু।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরও নির্বাহী আদেশে এমন কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। দেশগুলো হচ্ছে- ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেন। কয়েকবার সংশোধন করার পর ২০১৮ সালে সেটি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।
দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পরপরই তিনি কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.