বিএসইসি’র ‘উচ্ছৃঙ্খল’ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন। গত বুধবার বিভিন্ন দাবিতে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

শনিবার ( ৮ মার্চ) বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম এবং মহাসচিব শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সই করা এক যৌথ বিবৃতিতে বিএসইসি কর্মকর্তাদের ওই আচরণকে প্রচলিত আইন বিরোধী ও শাস্তিযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের যে কোন যৌক্তিক দাবী ও অভিযোগ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের প্রতি অনুগত থেকে পেশ করা উচিত। এ ধরনের অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা না গেলে রাষ্ট্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এমতাবস্থায়, সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য আচরণবিধিকে অমান্য করে সন্ত্রাসী কায়দায় সরকারি ভবন ও কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ ও আক্রমণ করায় সরকারের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ মার্চ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারি সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তাদেরকে বিএইসি ভবনের চতুর্থ তলায় ৪ (চার) ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং তাদের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করেন।

গত মঙ্গলবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর নির্দেশনা জারি করে কমিশন। এ ঘটনায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। পরদিন তাদের একটি অংশ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে সাইফুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর নির্দেশনা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে থাকে। কমিশন সাতে রাজি না হওয়ায় তারা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেয়, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে করেন। এমন অবস্থায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা এসে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন এবং চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে নিরাপদে অফিস ছেড়ে যেতে সাহায্য করেন।

বুধবার বিকালে সাইফুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। এ অনুসারে, বৃহস্পতিবার তারা  কর্মবিরতি পালন করেন। অন্যদিকে পুলিশ ও সেনা সহায়তা নিয়ে চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা অফিসে আসেন।

বুধবারের ঘটনায় গতকাল (৭ মার্চ) বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান শেরে বাংলা নগর থানা ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে, বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী(৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.