অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক লঞ্চের নির্ধারিত স্থানে সরকার থেকে নির্ধারিত ভাড়ার রেট চার্ট দেখাতে হবে। না হলে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, ঈদের সময় যাত্রীদের জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে প্রায় দেড়-দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হয়। আসন্ন ঈদে এ ধরনের অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। নৌপথে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নৌচলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে ওই সভার আয়োজন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন ঈদযাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়ী ব্যক্তিদের শুধু জরিমানাই করা হবে না, রুট পারমিটও বাতিল করা হবে। কোনও অবস্থাতেই ফিটনেসবিহীন জলযান নৌপথে চলাচল করতে পারবে না। কোনও লঞ্চ বা ফেরি সিরিয়াল ব্রেক করে চলতে পারবে না। নৌপরিবহন অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটে যাদের ইজারা দেওয়া হয়েছে, তারা যাত্রীদের কোনও ধরনের হয়রানি nকরতে পারবেন না। কোনও অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবেন না। বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তদারকি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ এ সময় উপদেষ্টা যেসব জলযানের ফিটনেস নেই তাদের অবিলম্বে ফিটনেস সনদ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নৌযাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাতে চলাচলকারী লঞ্চে আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাতে চলাচলকারী দূরপাল্লাগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার জন করে আনসার সদস্য নিয়োগের জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবে। লঞ্চে বা ফেরিঘাটে কর্মরত স্টাফদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং আইডি কার্ড থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, বরিশালের মেঘনা নদীসহ অপরাধপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে।’
১৫ রমজান হতে ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্মুক্ত রাখতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোভাবেই রাস্তার ওপরে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনী বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে। প্রয়োজনে রেকার দিয়ে অভিযুক্ত বাসগুলোকে সড়িয়ে দিতে হবে।’ ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে উপদেষ্টা সদরঘাটসহ নৌরুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.