ইন্দো-বাংলা ফার্মা ও মসলিন ক্যাপিটালের বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি

পুঁজিবাজারে ওষুধ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি মসলিন ক্যাপিটাল লিমিটেডের বেশকিছু বিষয় খতিয়ে দেখতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সম্প্রতি বিএসইসির পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত দুটি আদেশ জারি করা হয়েছে। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম সংবাদ মাধ্যমকে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তথ্যানুসারে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটির সংগৃহীত তহবিল ব্যয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বিএসইসির তদন্ত কমিটি। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক হিসাবমান অনুসারে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে কিনা এবং প্রতিবেদনে কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে কিনা সেটি দেখা হবে। পাশাপাশি কোম্পানিটি যথাযথভাবে আইপিওর অর্থ ব্যয় করেছে কিনা সেটিও দেখা হবে। ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৮ সালে। আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করে। যন্ত্রপাতি আমদানি ও আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ খাতে এ অর্থ ব্যয় করেছে কোম্পানিটি। ২০২০ সালের মার্চে কোম্পানিটি আইপিওর পুরো অর্থ ব্যয় সম্পন্ন করেছে। প্রথমে নির্মাণ ও পূর্তকাজে আইপিওর অর্থ ব্যয় করার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে সেটি পরিবর্তন করে যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের বেশকিছু বিষয়ে বিরূপ মতামত দিয়েছেন কোম্পানিটির নিরীক্ষক। নিরীক্ষকের মতামত অনুসারে, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের আর্থিক প্রতিবেদনে সম্পদ, কারখানা ও সরঞ্জাম বাবদ ১২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। যদিও এ-সংক্রান্ত কোনো খতিয়ান বা লিখিত বিবরণী নিরীক্ষককে দেয়নি কোম্পানিটি। এ কারণে এসব সম্পদের পূর্ণাঙ্গতা সন্তোষজনকভাবে যাচাই করতে পারেননি নিরীক্ষক। মজুদ পণ্যের ক্ষেত্রে কাঁচামালের মূল্য, প্রস্তুতকৃত পণ্য ও প্রক্রিয়াধীন পণ্যসংক্রান্ত তথ্য নিরীক্ষককে দেয়নি কোম্পানিটি। ফলে এগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারেননি নিরীক্ষক।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক) ২০ কোটি ৩১ লাখ টাকার বিক্রি দেখানো হয়েছে। যদিও ১২ মাসের মূসক রিটার্ন যাচাই করে নিরীক্ষক ৯ কোটি ১১ লাখ টাকার বিক্রির তথ্য পেয়েছেন। ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে ৪ কোটি ৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা লোকসান হওয়ার পাশাপাশি কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতা ও তারল্য পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত সংকট মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে কোম্পানিটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন নিরীক্ষক।

এদিকে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মসলিন ক্যাপিটালের কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখবে বিএসইসির তদন্ত কমিটি।

মসলিন ক্যাপিটাল ২০১৯ সালে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরুর বছর মসলিন ভেঞ্চার ভিসি ফান্ড-ওয়ান নামে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড গঠন করে। ফান্ডটির আকার ১০ কোটি টাকা। এর বাইরে এখন পর্যন্ত সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিটি আর কোনো ফান্ড চালু করতে পারেনি।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.