বেসরকারি এমপিওভুক্তি শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাত বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষকদের বেতনভাতা নিয়ে অনেক আন্দোলন হচ্ছিল। আমরা নীতিগতভাবে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, শিক্ষকদের মধ্যে (গ্রুপ) অনেক রকমের, এরা কিন্তু এক না। এদের মধ্যে বিভাজন রয়েছে। বিভিন্নভাবে রিক্রুটেমেন্ট হয়েছে পদায়ন হয়েছে। এরাও বিভক্ত। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এক রকম, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আরেক রকম, ২০১৫ সাল থেকে আরেক রকম। পরীক্ষাসহ সব কিছু আলাদা আলাদা হয়েছে বলেই এদের দাবি-দাওয়া ভিন্ন রকম রয়েছে। তার মধ্যে বেতন ভাতার ব্যাপারে একই দাবি, সবারই বেতন-ভাতা অপর্যাপ্ত।
বুধবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নতুন উপদেষ্টা সি আর আবরার (চৌধুরী রফিকুল আবরার) উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নীতিগতভাবে আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, রাস্তায় যদি আন্দোলনে দাবি-দাওয়াতে বাধ্য হয়ে যদি আমাদের সময়সীমার মধ্যে কিছু ঘোষণা করতে হয়, তাহলে ভারসাম্য থাকে না। কিন্তু ন্যায্য দাবিতে যাদের বেশি শক্তি আছে, সেগুলো যদি আগে মেটাতে যাই… আবার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পাঁচ-ছয় বছরের কল্যাণ ও অবসর ভাতার যে ফান্ডে ছিল, সেই ফান্ড এমন একটা ব্যাংকে ইচ্ছে করেই রাখা হয়েছিল, যে ব্যাংকটাতে টাকা পয়সা নেই। আর কিছু ফান্ড চলে গেছে অন্য জায়গায়। যাই হোক… এই পাঁচ ছয় বছরের যে একটা ব্যাকলক। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণভাতা ও অবসরভাতা, এটা তো সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। কিন্তু তারা তো সংঘবদ্ধ না। তাই বলে এটা কি কম গুরুত্বপূর্ণ? আমি তো মনে করি, এটাই সবচেয়ে আগে মেটানো উচিত। তাদের এই দাবিগুলো সেকারণে আন্দোলনের মধ্যে বেঁধে দেওয়ার সময়ের মধ্যে পূরণ না করে আমি সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিলাম যে, তাদের দাবিগুলো যতটা মেটানো যায়, আমরা চেষ্টা করবো। কিন্তু এই যে ১৫ থেকে ২০ বছরের বঞ্চনা এক বছর দুই বছরের বাজেট দিয়ে তো মেটানো যায় না। এটাতো বোঝানো কঠিন।
সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সমান করে দিতে হবে উল্লেখ করেন তিনি। যদিও ১৫ বছরের এই বৈষম্য দুয়েক বছরের বাজেটে ঠিক করা সম্ভব নয় জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু শুরুটা করা দরকার। শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি। তাদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেটে অন্তত কিছু বাজেটে বাড়াতে পারবো। আমি এখন ঘোষণা দিচ্ছি না। এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রবিশন রাখা হচ্ছে। অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য একটি ফান্ড এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও হবে। এটি টেকসই করতে হলে এক-দুটি বাজেটে হবে না, ভবিষ্যতে হয়ে যাবে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.