সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ও প্রতিষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দেওয়া এবং দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে রেললাইন অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন এলাকায় তারা এই অবরোধ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র-শিক্ষক এক হও, ঢাবি সিন্ডিকেট ভেঙে দাও, বিকেন্দ্রীকরণ বাংলাদেশ গড়ো’, ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়ো ঢাবি ভক্তি’, ‘ঢাবিবাদ নিপাত যাক, বাংলাদেশ মুক্তি পাক’, ‘সিন্ডিকেট না মুক্তি? মুক্তি মুক্তি’, ‘ঢাকা না বাংলাদেশ? বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে মঙ্গলবার রেললাইন অবরোধের ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবির অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। তিনি বলেন, এই নতুন বাংলাদেশে আবার যদি বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয় তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাংলাদেশের মানুষ আবার সেই ফ্যাসিস্ট আচরণকে সমূলে উৎপাটন করবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপককে শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এমন একটি খবর ভেসে এসেছিল। তার কিছুক্ষণ পর আমরা জানতে পারি অন্য কেউ হচ্ছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। রাবি শিক্ষককে সরিয়ে ঢাবি থেকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। জুলাইয়ের আগে প্রতিটি ক্যাম্পাস ছিল ফ্যাসিবাদ নির্মূলের আঁতুড়ঘর- কিন্তু জুলাইয়ের পর দেখছি প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আর কোনও ক্যাম্পাসে কি যোগ্য মানুষ নেই? অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, পিএসসি, ইউজিসিসহ বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একমাত্র যোগ্য ব্যক্তিরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী, যা বৈষম্য ছাড়া কিছুই না। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। আমরা চাই সরকার ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করুক। এখন সময় এসেছে বিপ্লবের হিস্যা সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়ার।
রেলপথ অবরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধিকার আদায় বা সংস্কারে সাময়িক অসুবিধা হবেই। আমাদের আর ঢাবির মধ্যে পার্থক্যটা এটাই। ঢাবি অধিকার আদায়ের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা শাহবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ব্লকেড করে দেয়, রাজুর মতো জায়গা আটকে দেয়। আর আমরা রেল ব্লকেড দিতেই একদল ভোগান্তির কথা চিন্তা করছেন। জুলাইয়ের পর উত্তরবঙ্গ নিয়ে চিন্তা না থাকলে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে দিই দেখি ঢাকার এই উত্তরবঙ্গ লাগে কি না। যারা রেল ব্লকেড করবে তারাও রোজাদার। আপনাদের এই সহনশীল আচরণ এবং মানবিক মূল্যবোধ অবশ্যই পজিটিভ কিন্তু দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে সাময়িক রাষ্ট্র অচল করে দিয়ে নিজেদের মূল্য সরকারকে বোঝানো গুরুত্বপূর্ণ।
রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল আলম বলেন, সকাল থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে এখন সব ট্রেন রাজশাহী স্টেশন ও হরিয়ান স্টেশনে আটকা আছে। এ আন্দোলন স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে না।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.