রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আতিকুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা ১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে গ্রেফতার শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। এদিন সকালে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর কাফরুল থানার আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে গ্রেফতার দেখান আদালত।
গ্রেফতার শুনানি শেষে বিচারকের উদ্দেশ্যে কথা বলতে থাকেন কামরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, আমার ৭৬ বছর বয়স। চোখে সমস্যা। ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনও খোঁজ-খবর নিতে পারছি। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবো না। রাজনীতি থেকে ইস্তেফা দিলাম। আমি আওয়ামী লীগের কোনও পদে নেই। এখন থেকে প্রাথমিক সদস্য পথ থেকেও পদত্যাগ করলাম।
তার ওপর নির্যাতন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কারাগারে ডায়াবেটিসের চেক করার জন্য ডিজিটাল কোনও যন্ত্র বা ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। ডিজিটাল কোরআনও দেওয়া হচ্ছে না। একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক নির্যাতন করা হচ্ছে। এই বয়সে আমার ওপরে জুলুম চালানো হচ্ছে। আল্লাহকে ডাক দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।
এরপর ভারাক্রান্ত মনে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, এ বয়সে আমার নাতি নাতনীদের সঙ্গে খেলার কথা। অথচ আমাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর রাজনীতি করতে চাই না। আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি ডায়াবেটিসের ওষুধ, ডায়াবেটিস মাপার ডিজিটাল যন্ত্র এবং ডিজিটাল কোরআন শরীফ দেওয়া হোক।
এ সময় বিচারক বলেন, আপনার সবগুলো দাবি আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। এরপর বিচারক তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
পরে আদালত থেকে হাজতের উদ্দেশ্য নেওয়ার পথে তিনি বলেন, এ বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক। আমাদের বয়স শেষ।
জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় একটা হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় কামাল মজুমদার ১০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.