আড়াইশ করতে পারল না বাংলাদেশ

শেষ পর্যন্ত জাকের ও তাসকিন মিলে বাংলাদেশকে আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যান। জাকের আলী ইনিংসের শেষদিকে ৫৫ বলে ৪৫ রান করে রান আউট হয়েছেন। জাকের আউট হলে আর বাংলাদেশ আড়াইশ পার করতে পারেননি। তাসকিনও শেষদিকে ১৯ বলে ১০ রান করে ফিরে গেছেন জেমিসনের বলে কনওয়েকে ক্যাচ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৩৬ রান সংগ্রহ করতে পারে ৯ উইকেট নিয়ে।

যদিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুটা বেশ রয়েসয়ে করে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম পাঁচ ওভারে দুই ওপেনার মিলে তোলেন ২৪ রান। উইকেটে কিছুটা থিতু হয়ে ধীরে ধীরে আগ্রাসী হতে থাকেন তানজিদ-শান্ত। এর মধ্যে কাইল জেমিসনের করা অষ্টম ওভারে তিনটি চার হাঁকান শান্ত। এর মধ্যে প্রথম চারটি হাঁকিয়ে ওয়ানডেতে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন শান্ত। ৪৯তম ম্যাচে এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি।

নবম ওভারে আক্রমণে আসেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। দ্বিতীয় বলেই তানজিদকে ফেরান এই স্পিনার। ব্রেসওয়েলের টসড আপ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তানজিদ, বাম দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি লুফে নেন কেন উইলিয়ামসন। ২৪ বলে ২৪ রানে ফিরে যান তানজিদ। বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে তোলে ৪৫ রান। এই ওভারের শেষ বলে ডাউন দ্যা গ্রাউন্ডে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে পঞ্চাশ পার করান নতুন ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেটে ৫৮ রান।

দলীয় ১২ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। উইলিয়াম ও’রুর্কি’র ফুল লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড অনে মিচেল সান্টনারকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিন নম্বরে নামা মিরাজ। ১৪ বলে একটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩ রান করেন মিরাজ। ৬৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে দুই উইকেটে ৭৮ রান। দলীয় ১০০ রানে পৌঁছানোর আগে তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মাইকেল ব্রেসওয়েলের ফুল লেংথ ডেলিভারিটি এক পা পেছনে গিয়ে কভারের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছলেন হৃদয়। যদিও টাইমিংয়ে বড় রকমের ভুল করেন তিনি। বল চলে যায় কেন উইলিয়ামসনের মুঠোয়। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এই ম্যাচে করেন ২৪ বলে সাত রান। এই জুটি দলের রানের খাতায় যোগ করে ৩৩ রান। ৯৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ২১.১ ওভারে দলীয় শতরানে পৌঁছায় বাংলাদেশ।

নিজের পরের ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পান ব্রেসওয়েল। এবার অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। ব্রেসওয়েলের অফ স্টাম্পের বাইরে করা ফুল লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মুশফিক। সহজ ক্যাচটি তালুবন্দী করেন রাচিন রবীন্দ্র। পাঁচ বলে দুই রান করেন অভিজ্ঞ মুশফিক। ১০৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

মুশফিক ফেরার পরের ওভারে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন শান্ত। বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ক্যারিয়ারে এটি তার দশম হাফ সেঞ্চুরি, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয়। ইনিংসের ২৭তম ওভারে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন ব্রেসওয়েল। ১৪ বলে চার রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। ব্রেসওয়েলের লেংথ ডেলিভারিটি ডাউন দ্যা গ্রাউন্ডে খেলতে গিয়ে মিস টাইমিং করেন মাহমুদ উল্লাহ। শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচটি নেন উইলিয়াম ও’ রুর্কি। ১১৯ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, ৯৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছিল দলটি।

দ্রুত সময়ের মধ্যে তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শান্ত-জাকের। ৩৫.১ ওভারে দেড়শ রানের গণ্ডি পার করে বাংলাদেশ। একপ্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও অন্যপ্রান্ত ধরে খেলছিলেন শান্ত। ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেও। তবে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে তিনি উইলিয়াম ও’রুকের ওপর চড়াও হতে গিয়ে মিড অনে টপ এজ হয়ে মিচেল ব্রেসওয়েলকে ক্যাচ দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশ দুশর আগেই হারায় ৬ উইকেট। রিশাদ হোসেন উইকেটে এসেই মেরে খেলার চেষ্টা করছিলেন। জাকেরের সঙ্গে জুটি গড়ে বাংলাদেশের রানের চাকাও সচল রেখেছিলেন তিনি। তবে রিশাদকে বেশিদূর এগোতে দেননি ম্যাট হেনরি। এই পেসারের বলে ডিপে ক্যাচ দিয়েছেন মিচেল স্যান্টনারের হাতে। ২৫ বলে ২৬ রান করে ফিরেন রিশাদ।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.