ইরানে ২০২৪ সালে অন্তত ৯৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুইটি মানবাধিকার সংগঠন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের সংখ্যাটি ২০২৩ সালে রেকর্ড করা ৮৩৪টি মৃত্যুদণ্ডের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
৯৭৫ জনের মধ্যে চারজনকে জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল এবং ৩১ জন নারী ছিলেন, যা গত ১৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে, চীনের পরে ইরান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। জনসাধারণের মধ্যে ভয়-ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অভিযোগ করেছে, বিশেষ করে ২০২২ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে পশ্চিমা-সমর্থিত শাহকে উৎখাতের পর প্রতিষ্ঠিত শরিয়া-ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড এখনো বিদ্যমান।
মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধের মধ্যে রয়েছে খুন, ধর্ষণ এবং মাদক সংক্রান্ত অপরাধ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বেশিরভাগ কারাগারের আঙ্গিনায় ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। যদিও অন্যান্য পদ্ধতি আইনে রয়েছে তবে মাঝে মাঝে জনসমক্ষেও ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইরানের বাধ্যতামূলক পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ইরানি-কুর্দি নারী মাশা আমিনির হেফাজতে মৃত্যুর পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কারণে গত বছর দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
২০২২ সালের অক্টোবরে এক বিক্ষোভের সময় গাড়ি চালিয়ে একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যার অভিযোগে ২৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ ঘোবাদলুর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করেছে, তার বিচার অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ছিল। বিচারকরা আসামিপক্ষের উপস্থাপিত প্রমাণ উপেক্ষা করে বলেছেন, তিনি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন।
২০২২ সালের বিক্ষোভের সময় একজন বিপ্লবী গার্ডকে হত্যার অভিযোগে ৩৪ বছর বয়সী গোলামরেজা রাসাইর আগস্ট মাসে গোপনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, নির্যাতনের মাধ্যমে তার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, ইরান গত বছর আরো বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে এমন প্রমাণ রয়েছে, যা তারা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। তারা বলেছে, ২০২৪ সালে আরো ৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার খবর পাওয়া গেছে। আইএইচআর বলেছে, ইতোমধ্যে চলতি বছর অন্তত ১২১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.