সারাদেশে অনেক টিটিসি (কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) তৈরি হয়ে আছে কিন্তু সেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা পাওয়া যাচ্ছে না- এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, শুধু টিটিসি না, বাংলাদেশের শুধু বিল্ডিং আছে কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে সেবা নাই, এটা আমার গত ছয় মাসের অভিজ্ঞতা। আমরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি, ভালো কিছু করার জন্য।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের পঞ্চম অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ অধিবেশন হয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ডিসিরা আমাদের বললেন, যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তাদের যখন ধরা হয়, তখন দেখা যাচ্ছে তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। এটা ওনাদের কনসার্ন। অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব বললেন, আদালতের কাজই তো হচ্ছে উপযুক্ত ক্ষেত্রে জামিন দেওয়া। এ ধরনের কিছু সমন্বয়ের ব্যাপার আসছে। আমরা উনাদের (ডিসি) বলেছি আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মামলার ক্ষেত্রে আমাদের সলিসিটর যে উইং আছে, তারা আরও ভালোভাবে সমন্বয়ের জন্য কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটা বলেছি। ডিসি অফিসগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে রয়েছে স্থান-সংকুলানের সমস্যা। সেটার সমাধানের জন্য কি করা যায়, সেই বিষয়ে কথা বলেছি।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে আমরা তাদের একটি অনুরোধ করেছি- যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার পর ছাত্ররা কয়েক মাস সময় পায়। ওই সময়টাতে ওনারা যেন তাদের টিটিসিতে নিয়ে আসেন, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে। ওনারা (ডিসি) আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। ওনারা বলেছেন বিদেশে যারা যেতে চায়, তাদের সবার যেন ডাটাবেজ করা হয়। শুধু প্রশিক্ষণ যারা নিয়েছেন তাদের না। ওনারা যেটি বলেছেন সেটি আমরা সত্যি ভাবছি। যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের ডাটাবেজ করার পদক্ষেপ নিয়েছি, অচিরেই কাজ শুরু হবে। এছাড়া জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে আরও সচেতনতা সৃষ্টির কথা বলেছেন। সরকারি যে রিক্রুটিং এজেন্সি আছে সেগুলোকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। আমাদের কাছে ভালো লেগেছে এটা ভেবে যে, এটা তো আমরাও ভাবছি।
প্রশাসনের সবচেয়ে মেধাবী কর্মকর্তারা ডিসি হন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু রাষ্ট্রের এত বড় একটি রিসার্চ রিসোর্সকে গত ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে অত্যাচারের নিপীড়ন করার জন্য, তাদের অপকর্ম জায়েজ করার জন্য ব্যবহার করেছে। সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে এটা যদি আমরা পজিটিভভাবে কাজে লাগাই, জনগণের সেবার জন্য, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য, ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা সেবা দেওয়ার জন্য- সেই ক্যাপাবিলিটি তাদের আছে। কিন্তু ওই রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা থাকে না।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব ভবিষ্যতে যেই দল এই বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসুক প্রশাসন ক্যাডারের আমাদের যে অসীম সম্ভাবনার শক্তি রয়েছে, এটাকে যেন জনগণকে নিপীড়নের কাজে না লাগিয়ে আমাদের সংবিধানে যেভাবে বলা আছে জনগণের সেবা করার কাজে যেন লাগাই। এটাই আমার প্রত্যাশা থাকবে।
জনগণকে সেবা দিতে আপনারা কি ফরমুলা দিয়েছেন- এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, এখানে ফর্মুলার ব্যাপার নেই। আইনে যা আছে, নীতিমালায় যা আছে, সেটা মেনে চললে জনগণের সেবা আর কল্যাণ দেওয়া ছাড়া ওনাদের আর কোনো কাজই নেই। সুতরাং আমাদের শুধু একটা কথাই যে আপনি আইন অনুযায়ী চলেন, আপনি আপনার বিবেক মতো চলেন। তাদের যে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.