সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, মানুষের আয় বাড়ছে, এর সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে। আর এতে খাদ্য পণ্যের বাজার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে বাজার তদারকি দুর্বল হচ্ছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে মূল প্রবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। অতিথি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান,অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) এবং (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান উপস্থিত রয়েছেন।
এছাড়া প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন এ এইচ এম আহসান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, জাতীয় ভোক্তা-অধিকারের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও এমডি মোস্তফা কামাল, টি কে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মোহাম্মাদ মুস্তাফা হায়দার, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে আগের সরকারের মধ্যে পলিসি সংক্রান্ত যে প্রবণতা ছিলো, বর্তমান সরকারও সেই একই প্রবণতার মধ্যে রয়েছে। ফুড সাপ্লাই চেইন একটি দুষ্ট চক্রের মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে আটকে রেখে বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা দেওয়া হয়। পণ্য সংক্রান্ত তথ্য সরকারের কাছে কাছে নেই। বাৎসরিক তথ্য থাকলেও সরকারের কাছে পণ্য সাপ্লাইয়ের ডেইলি ও মান্থলি তথ্য নেই।
তিনি বলেন, একজন ডিস্ট্রিবিউটর একজনের পণ্য বিক্রি করবে এটি বন্ধ করা উচিত। এতে মার্কেটে আরেক স্বৈরতন্ত্র তৈরি হয়। বাজারের এই স্বৈরতন্ত্র বন্ধ করা উচিত। পাশাপাশি কিছু অপারেশনাল রিফর্ম দরকার। শেল কোম্পানির কার্যক্রম লিগ্যাল অপারেশনের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। এছাড়া আমাদের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য কাজ করা উচিত।
কোন পথে এগোলে যৌক্তিক দামে পণ্য পাবে ভোক্তা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক এই পলিসি কনক্লেভ আয়োজন করছে বণিক বার্তা।
শীর্ষ এই গণমাধ্যমটি জানায়, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের প্রক্রিয়া চলমান। বিপর্যস্ততা থেকে উত্তরণের পথে অর্থনীতি। যদিও বাজারে মূল্যস্ফীতির প্রভাব বিদ্যমান, জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপে আছে সাধারণ মানুষ। আসন্ন রমজান ঘিরেও ভোগ্যপণ্যের বাজারে রয়েছে চ্যালেঞ্জ। তবে এরই মধ্যে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন, জোগান ও যৌক্তিক মূল্যে সাধারণের নিকট সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, পণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে ভোক্তার। রয়েছে বাজার সিন্ডিকেটের প্রশ্নও। উল্টো দিকে সরবরাহ চেইন ঠিক রাখা এবং উপযুক্ত দামে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানোতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার প্রভাব ও চাঁদাবাজিকে গুরুতর প্রতিবন্ধক হিসেবে সামনে আনতে চান ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া সরকারের পক্ষে শুধু টিসিবির মতো প্রতিষ্ঠান দিয়ে বাজারে ভারসাম্য আনাও কঠিন।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.