রোহিঙ্গাদের জন্য আমেরিকা সাহায্য বন্ধ করছে না: প্রেস সচিব

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য আমেরিকা বন্ধ করছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশে আগামী ৯০ দিনের জন্য সব মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছেন। তবে এ অবস্থায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার এ বছরই বড় আকারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। এতে ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত সম্মেলনের সহ-আয়োজক জাতিসংঘ। দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভা প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা ঐতিহাসিক সফর ছিল। সভায় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে পোশাক শিল্প নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, গার্মেন্টসের এক্সপোর্ট কি কমেছে? আজকেও একটা পত্রিকায় দেখলাম যে ৫১টি ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়েছে। ফ্যাক্টরি বন্ধ হবে, খুলবে, একটা ন্যাচারাল প্রসেস। সরকার দেখে যে বাংলাদেশের এক্সপোর্ট বাড়ছে কি না। বাংলাদেশের এক্সপোর্ট সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৭ শতাংশ, অক্টোবরে ১৬/১৮ শতাংশ, নভেম্বরে প্রায় ২২ শতাংশ। ডিসেম্বরে ১৮ শতাংশের মতো। আমাদের গ্রোথ এরকম।

তিনি বলেন, যেসব ফ্যাক্টরির মালিক পালিয়ে গেছে, তাদের পুরো বার্ডেনটা আমাদের ওপর দিয়ে গেছেন। ব্যাংকগুলো থেকে চুরি করে যা যা ছিল সব নিয়ে পালিয়ে গেছে। শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে তারা মজা দেখছেন। এক্সপোর্ট বাড়া মানে জব তৈরি হওয়া। ওভার অল এক্সপোর্ট আমাদের বাড়ছে। আমরা এক্সপোর্টের ফিগারের ব্যাপারে কোনো ম্যানিপুলেটিং করছি না। শেখ হাসিনার আমলে ম্যানিপুলেশন হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই স্লো প্রসেস। এটার জন্য যত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার সেই পদক্ষেপই নিয়েছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে টাস্কফোর্স, অ্যাসেট রিকভারি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ১১টা টিম কাজ করছি। সারা বিশ্বের টপ টপ এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছি। পাচার করা টাকা ফেরত আনা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শফিকুল আলম বলেন, যে টাকা পাচার হয়েছে সেটা বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা। তাদের টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে শেখ হাসিনার চোরত্রন্ত্রের লোকজন। সে টাকাটা আমরা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। সেটার জন্য আমরা গ্লোবালি একটা সমর্থক চাচ্ছিলাম। সেটাতে সবাই অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। এটা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রফেসর ইউনুস যখনই বিশ্বের টপ লিডারদের সঙ্গে কথা বলছেন তখন তিনি এ বিষয়টা তুলছেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ, অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ইউএসএইডের অধিগ্রহণ ও সহায়তা তত্ত্বাবধায়ক চুক্তি কর্মকর্তা ব্রায়ান বি অ্যারন স্বাক্ষরিত মার্কিন সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করা বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ বাস্তবায়নকারী সব অংশীদারদের চুক্তি, কার্যাদেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা স্মারকের অধীনে সম্পাদিত যেকোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া লিখিত কোনো নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এই সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানোর কথাও বলা হয়। তবে এই আদেশের প্রভাব জরুরি খাদ্য সহায়তার ওপর নাও পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.