কলম্বিয়ায় বিদ্রোহীদের হামলায় ৮০ জনের বেশি নিহত

লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় উত্তর-পূর্বে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ইএলএন) বিদ্রোহীদের হামলায় তিন দিনের মধ্যে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) কলম্বিয়ার উত্তর-পূর্বের কাটাতুম্বো অঞ্চলে ইএলএন বিদ্রোহীরা তাদের একটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর উপর হামলা চালায়। ওই গোষ্ঠীটি এখন বিলুপ্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী রেভ্যুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক)-র সাবেক সদস্যদের নিয়ে গঠিত। ২০১৭ সালে ফার্ক নিরস্ত্র হওয়ার পর থেকে তারা লড়াই চালিয়ে আসছিল।

এই সংঘর্ষের মধ্যে আটকা পড়ে অসহায় সাধারণ জনগণ। রোববার পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নর্তে দে সান্তানদার বিভাগের গভর্নর উইলিয়াম ভিয়ামিজার। শনিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ৬০, যার মধ্যে সাতজন প্রাক্তন এফএআরসি যোদ্ধা। এই সংখ্যা ভেনেজুয়েলা সীমান্তবর্তী মাদক উৎপাদনকারী পাহাড়ি অঞ্চলের পাঁচটি পৌরসভা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কমিউনিটি নেতা কারমেলো গুয়েরেরো এবং সাতজন ব্যক্তি, যারা একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা করছিলেন। এমনটি জানিয়েছে শনিবার রাতে প্রকাশিত একটি সরকারি ন্যায়পাল এজেন্সির রিপোর্ট।

হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, কেউ কেউ পাশের পাহাড়ে লুকিয়ে থাকছেন বা সরকারি আশ্রয়ে সাহায্য চাইছেন। ভিয়ামিজার বলেছেন, সহিংসতার কারণে প্রায় দুই ডজন লোক আহত হয়েছেন এবং প্রায় ৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংঘাতের ফলে মানবিক সৃষ্ট পরিস্থিতিকে “উদ্বেগজনক” হিসাবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

শনিবার এক ভাষণে ভিয়ামিজার বলেন, ক্যাটাটুম্বোর সাহায্য দরকার। ছেলে, মেয়ে, যুবক, কিশোরসহ পুরো পরিবারকে কোনো কিছু ছাড়াই চলে যেতে দেখা যাচ্ছে এবং ট্রাক, ডাম্প ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ যে যা পারছেন তাতে করে বা পায়ে হেঁটে এই সংঘাতের শিকার হওয়া এড়ানোর চেষ্টা করছেন।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘নিরাপত্তা জোরদার করতে’ অঞ্চলটিতে ৫ হাজারেরও বেশি সেনা পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল লুইস এমিলিও কার্দোসো সান্তামারিয়া শনিবার জানিয়েছেন, তিবু ও কুকুতা শহরের মধ্যে একটি মানবিক করিডোর তৈরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে বাস্তুচ্যুতরা নিরাপদে যেতে পারে।

তিনি আরো জানান, বিশেষ নগর সৈন্যরা পৌরসভাগুলোর রাজধানীতে মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে ঝুঁকি এবং ভয় বেশি।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.