সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীকে (৬৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
এর আগে, দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হুসাইন আসামিকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। কিন্তু আসামি পক্ষের কোনও আইনজীবী জামিন আবেদন করেননি। পরে শুনানি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে আসামি নিজের ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্বনামে বা বেনামে অর্জিত স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিল করার জন্য সম্পদ বিবরণী জারি করা হয়। তিনি গত বছরের ২৭ অক্টোবর নিজ স্বাক্ষরে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশসহ সম্পদ বিবরণী ফরম গ্রহণ করেন। কিন্তু আদেশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ গত ২৫ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। জামিন মঞ্জুর হলে আসামি আত্মগোপন করতে পারেন এবং সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন এবং তদন্ত কাজকে প্রভাবিত করতে পারেন।
আজ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিতাংশু কুমারকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সম্পদের বিবরণী দাখিল না করায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে এই পরিবারের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক। আলোচিত পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৯ মার্চ এস কে সুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। অভিযোগ আছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.