লিফটে না তোলায় পুলিশের সঙ্গে উচ্চবাচ্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর

রাজধানীর লালবাগ থানার মো. আলী হত্যা মামলায় গ্রেফতার শুনানিতে আদালতের নেওয়ার সময় লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। একপর্যায়ে ও করেন তিনি।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে শীতের সকাল ৯টার আগেই প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় কামরুল ইসলাম, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৫ জনকে। এরপর তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর বিভিন্ন থানার হত্যা মামলার শুনানির জন্য তাদের এজলাসে তোলা হয়। এসময় নিরাপত্তা দিতে সারিবদ্ধ হয়ে হাজতখানা থেকে কোর্টের সিঁড়ি পর্যন্ত ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ।

পরে কামরুল, পলক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৫ জনকে মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া এবং বুলেটপ্রুভ জ্যাকেট পরিয়ে সারিবদ্ধভাবে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতের তোলার সময় বাঁধে বিপত্তি। আদালতের লিফটে না তুলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ তলায় তাদের তোলা হয় সিঁড়ি দিয়ে। এসময় নিরাপত্তায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর চটে যান কামরুল ইসলাম।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ফাইজলামি পাইছেন? দুইতলা বলে চার তলায় ওঠাচ্ছেন। ইতরামির একটা সীমা আছে। আদালতের লিফট কি নষ্ট? এতো উপরে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটানো হচ্ছে কেন?

এ সময় পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘আদালতে আপনারাই তো নষ্ট লিফট লাগাইছেন।’ এরপর কামরুল ইসলামকে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার সময় হাত ধরে সহায়তা করেন।

অন্য আসামিদের মধ্যে পলক, চৌধুরী মামুনসহ যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম কবিরাজ ও আবুল হোসেন নামে এক রাজনৈতিক ব্যক্তিকে স্বাভাবিকভাবে মলিনমুখে হেঁটে যেতে দেখা যায়। এরপর শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত আসামিদের বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে শুনানি শেষে কামরুল ইসলামকে আদালতের লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেয়ায় প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারকীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, লিফটের সামনে অনেক সময় বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, আইনজীবীদের ভিড় থাকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে, ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সিঁড়ি দিয়ে তোলা হয়। আর আদালতে আসলেই তিনি পুলিশের সাথে ঝগড়া করেন। কখনও আইনজীবিদের সঙ্গে ঝগড়া বাঁধান, আবার কখনো উচ্চবাচ্য করে বক্তব্য রাখেন। এটা ওনার স্বভাবজাত অভ্যাস।

এদিকে কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হন মো. আলী। এ ঘটনায় লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.