কৃষকদের বিক্ষোভে স্থবির ফ্রান্স

ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃষক ইউনিয়ন কো-অর্ডিনেশন রুরালস প্যারিসের কাছে সোমবার বিক্ষোভ শুরু করেছে। এ সময় তারা মেরকোসুর বাণিজ্য চুক্তির বিরোধিতা করছে এবং তাদের উৎপাদনের জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) আঙ্কারা ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

যদিও এদিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাধার কারণে তাদের রাজধানী প্যারিস ও লিওঁ-এ প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তবে তাদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের ফলে দেশটির সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম লা প্যারিসিয়েন।

কৃষকরা রোববার থেকেই ফ্রান্সের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাক্টর বহর নিয়ে প্যারিসে সমবেত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাধার মুখে সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনো বহরই রাজধানীতে পৌঁছাতে পারেনি।

এ বিষয়ে কৃষক ইউনিয়নের মুখপাত্র প্যাট্রিক লেগ্রাস বলেছেন, ‘আমরা গতকালের মতো এখনো একই স্থানে আটকে আছি’।

র‍্যামবুইয়ে, ওরভ্যু, মিউক্স এবং প্যারিসের পূর্বের RN4 মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রাক্টর বহর দেখা গেছে। পুলিশ ব্যারিকেডের কারণে সেখানে ব্যক্তিগত যানবাহনও দীর্ঘ জ্যামে পড়েছে।

বুরগুন্দি-ফ্রাঞ্চ-কমটে থেকে ১৫টি ট্রাক্টরের একটি বহর রাতভর চালিয়ে পুলিশের নজর এড়ানোর চেষ্টা করেছে। তবে তারা ফন্তেনাই-ত্রেজিনির কাছাকাছি D1004 মহাসড়কে আটকা পড়ে। সেখানে যানগুলোকে ধীরগতি করে দেওয়া ‘অপারেশন এসকারগো’র কারণে সোমবার সকালে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

কৃষক ইউনিয়ন মূলত প্যারিসে বিক্ষোভ করার জন্য একটি নির্ধারিত জায়গা চেয়েছিল। সেইসঙ্গে তারা প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিল। তবে তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

কো-অর্ডিনেশন রুরালসের মহাসচিব ক্রিশ্চিয়ান কনভারস জানিয়েছেন, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটাইয়ো এবং প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তারা কৃষকদের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

যে কারণে এই বিক্ষোভ, সেটি হলো ইইউ ও মেরকোসুরের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। যে চুক্তির আলোচনা ২০০০ সালে শুরু হলেও তা বিভিন্ন পর্যায়ে থেমে গিয়েছিল।

এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে উচ্চ শুল্ক কমানোর পাশাপাশি মেরকোসুর দেশগুলো সহজেই মাংস, মুরগি এবং চিনি ইইউতে রপ্তানি করতে পারবে। তবে এই চুক্তি এখনো স্বাক্ষরিত বা অনুমোদিত হয়নি।

ফ্রান্সের কৃষকদের অভিযোগ, এই ইইউ-মেরকোসুর চুক্তি গ্রামীণ জীবিকার জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই তার এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.