বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে বিএসএফ: মমতা

পশ্চিমবঙ্গকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। অনুপ্রবেশের এই ঘটনাকে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘জঘন্য নীলনকশা’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ’ পশ্চিমবঙ্গের শান্তি নষ্ট করছে বলে মন্তব্য করার কয়েক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রশাসনিক এক বৈঠকে এসব অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিএসএফ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলায় অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে এবং নারীদের ওপর নির্যাতন করছে। তৃণমূল কংগ্রেস সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে না। সীমান্ত আমাদের হাতে নেই। তাই কেউ যদি তৃণমূল কংগ্রেসকে অনুপ্রবেশের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ করে তাহলে আমি তাদের বলব, এই দায়িত্ব বিএসএফের।’

তৃণমূণের এই নেত্রী বলেন, তিনি রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালককে (ডিজিপি) তদন্ত এবং বিএসএফ অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে সীমান্তের এমন সব এলাকা শনাক্ত করার নির্দেশ দেবেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের কাছে সব ধরনের তথ্য আছে এবং কেন্দ্রের কাছেও রয়েছে। আমি রাজীব কুমার (ডিজিপি) এবং স্থানীয় সূত্র থেকে তথ্য পেয়েছি। আমি এই বিষয়ে কেন্দ্রকে একটি কড়া চিঠি লিখব।’

পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশে শান্তির জন্য নিজের আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনও শত্রুতা নেই। কিন্তু এখানে গুন্ডাদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তারা অপরাধ করে এবং সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। আর এটা করছে বিএসএফ এবং এতে কেন্দ্রের ভূমিকা রয়েছে।’

তবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অভিযোগের পাল্টায় ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেছেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। যারা ধরা পড়ছে তারা বাংলাদেশি এবং তাদের বেশিরভাগেরই ঠিকানাই বাংলা। মমতা ভোটের লোভে এসব করছেন এবং বাংলাকে বাংলাদেশি মুসলমান ও রোহিঙ্গাদের প্রবেশদ্বারে পরিণত করছেন।

এদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, ২০২৩ সালের ১৫০০ বাংলাদেশি ধরে দিয়েছিল বিএসএফ। ১৪০০কে জামিন দিয়ে দিয়েছে। এ বছর প্রায় ১০০০ ধরে দিয়েছে বিএসএফ ৯০০ জনকে জামিন দিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তার কাজ করছে। সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন মন্ত্রী। বিদেশ মন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে। ভারতের বিদেশ সচিব বাংলাদেশে গিয়ে বার্তা দিয়ে এসেছেন। ৬০০ কিলোমিটার জায়গায় বেড়া নেই, এদের দয়া করে জমিটা দিতে বলুন। পুলিশ আর বিএসএফের সমন্বয় বাড়াতে বলুন। ১৭টা চৌকির জন্য জমি চেয়েছে, দিতে বলুন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে; যার বেশির ভাগই উন্মুক্ত এবং নদীবেষ্টিত। এসব সীমান্ত দিয়ে প্রায়ই উভয় দেশে পণ্য ও অন্যান্য সামগ্রীর চোরাচালান এবং অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.