আতশবাজি ও পটকা না ফোটানোর আহ্বান, সন্ধ্যা থেকে চলবে ভ্রাম্যমাণ আদালত

ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইট কোনো আতশবাজি, পটকা না ফোটানোর আহ্বান জানিয়ে পানি সম্পদ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেছেন, এটিকে নিরুৎসাহী করতে সন্ধ্যার পর থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে সিনেট ভবনে তিনি একথা জানান। তিনি জানান, গণমাধ্যমকে স্ক্রল দিতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, আজকে যেন কোন আতশবাজি, পটকা না ফোটানো হয়। আজকে সন্ধ্যার পর থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

তিনি আরও জানান, আমরা গাছ সুরক্ষা আইনের জন্যে একটি আইন করছি। এই আইনের মধ্যে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন বন্ধ করার একটি আইন সংযোগ করা হবে। এটা আইনি বিধান অনু্যায়ী যখন আসবে তখন এতে শাস্তির বিধানও চলে আসবে বলে জানান তিনি।

এর আগে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হলো।

এতে বলা হয়, এর আগে থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজির শব্দে ভয় পেয়ে হৃদ্‌রোগে ভুগতে থাকা এক শিশুর মৃত্যু হয় বলে খবরে প্রকাশিত হয়। এছাড়া অতিরিক্ত শব্দের কারণে শ্রবণশক্তি ও স্মরণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাত, দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, কান ভোঁ ভোঁ করা, মাথা ঘোরা, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়া, মানসিক অস্থিরতা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়া সহ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইটে জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর এ ধরনের বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হলো।

উল্লেখ্য, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬-এর ৭ বিধি লঙ্ঘন করে অননুমোদিতভাবে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের সময় আতশবাজি ও পটকা ফোটালে তা বিধিমালার ১৮ বিধি অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

উল্লিখিত আইনের ব্যত্যয় হলে বা ভঙ্গ করলে প্রথম অপরাধের জন্য অনধিক ১ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।

এদিকে এক অনুষ্ঠানে চলতি ২০২৪ সালের প্রথম ঘণ্টায় শব্দ দূষণের হার তার আগের দিনের তুলনায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দূষণ সৃষ্টিকারী আতশবাজি ও ফানুসের আমদানি, ক্রয়-বিক্রি ও সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের সময় রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত আতশবাজি ও পটকা ফুটানো হলেও দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে ১২ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। দূষণ সৃষ্টিকারী আতশবাজি ও ফানুসের আমদানি, বিক্রয় ও সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শব্দ দূষণ বিধিমালা ২০০৬ এর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

দূষণ নির্ধারণ ও তার প্রভাব কমানোর জন্য গবেষণায় আরও বেশি তহবিল বরাদ্দেরও দাবি জানিয়ে বাপার এ যুগ্ম সম্পাদক বলেন, নববর্ষ উদযাপনের সময় পশুপাখির নিরাপত্তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.