আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সময়ে আশুলিয়ায় ৬ মরদেহ পোড়ানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম ও চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

প্রসিকিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বিএম সুলতান মাহমুদ, এস এম মইনুল করিম, শাইখ মাহদী।

এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাভারের আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে ৬ জনকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষে অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম ইসলাম খান পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, ২১ পুলিশ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক , সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, সাভার-আশুলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত এসপি মোবাশ্বিরা জাহান, সাবেক এসপি আব্দুল্লাহহিল কাফি, ঢাকা জেলা উত্তরের সাবেক ডিবি পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নির্মল চন্দ্র, ওসি এএফএম সায়েদ আহমেদ, এসআই আফজালুল, এসআই জলিল, এসআই মো. রাকিবুল এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন, এসআই আব্দুল মালেক, এএসআই সুমন চন্দ্র গাইন, এএসআই বিশ্বজিৎ রায়, কনস্টেবল মুকুল, কনস্টেবল রেজাউল করিমসহ কতিপয় পুলিশ সদস্য, আশুলিয়া থানার আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন ওরফে তুহিন কুলু, ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাদিম হোসেন, যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরদার, ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. শামীম হোসেন, যুবলীগের আলমগীর হোসেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ, সেক্রেটারি টিটু, সাভার ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সাভার আওয়ামী লীগের আলী হায়দারসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্যরা।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইলে ছাত্র-জনতার মিছিলে ১ থেকে ১২ নম্বর আসামির নির্দেশে ১৩ থেকে ৩৬ নং আসামিরা নির্বিচারে গুলি চালালে আহনাফসহ ৪৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। গুলিবিদ্ধ লাশগুলো ১৩ থেকে ১৬নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্য ময়লার বস্তার মতো করে ভ্যানে তোলেন। থানার পাশে পুলিশের একটি গাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তাদের লাশ পুড়িয়ে দিয়ে গণহত্যার নির্মম ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর খ ধারানুসারে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪(২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.