বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও অবশেষে এক দেশ, এক নির্বাচন বিল পেশ হলো ভারতের লোকসভায়। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জনরাম মেঘওয়াল। বিল পেশ হতেই আবারও তুমুল প্রতিবাদে ফেটে পড়েন বিরোধীরা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তাদের দাবি, বিলটি ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোতে আঘাত হানবে। এর মাধ্যমে মোদি সরকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিল পেশের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৬৯টি। বিপক্ষে পড়েছে ১৯৮টি। তবে এই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিলের বিরোধিতায় সরব হন কংগ্রেস সংসদ-সদস্য মণীশ তিওয়ারি।
তিনি বলেছেন, এই পদ্ধতি গণতন্ত্রের মূল ভাবনার পরিপন্থি। পাশাপাশি সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব বলেছেন, যারা একসঙ্গে ৮ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে পারছে না তারা কোন মুখে গোটা দেশে একসঙ্গে নির্বাচনের কথা বলে। তৃণমূল সংসদ-সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই বিল সংবিধানের মূল কাঠামোই আঘাত করবে।
বিজেপি কীভাবে এই বিল লোকসভায় পাশ করাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডিএমকে। সংসদ-সদস্য টিআর বালু প্রশ্ন রেখে বলেছেন, এই সরকারের যখন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই নেই তারা কিসের ভরসায় এই বিল পেশ করছে সংসদে?
‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে আগে থেকেই প্রতিবাদে মুখর ছিল কংগ্রেস, তৃণমূলের মতো বিরোধী দলগুলো। তাদের যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সংসদ সদস্য এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্র্যের সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়তে পারে।
ভারতের একেক রাজ্যে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয় একেক সময়। একসঙ্গে ভোট করাতে হলে কোনো কোনো রাজ্যের ভোট এগিয়ে আনতে হবে। কোনো কোনো রাজ্যের ভোট পিছিয়ে দিতে হবে। যা পদ্ধতিগতভাবে চরম সমস্যার।
এদিকে বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও লোকসভায় পেশ হয় বিলটি। এই ‘এক দেশ, এক ভোটে’র পক্ষে কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়-এর ফলে নির্বাচন করার বিপুল খরচে রাশ টানা যাবে।
যেমন সরকারের খরচ কমবে, তেমন রাজনৈতিক দলগুলোরও খরচ কমবে। বারবার নির্বাচনের জন্য সরকারি কাজকর্ম, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প থমকে যায়। একসঙ্গে ভোট হলে তা কমে যাবে। ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের খাটুনিও কমবে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.