দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই-সংঘাতের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। গত রোববার দুপুরে মংডু টাউনশিপের দক্ষিণে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সর্বশেষ ৫ নম্বর সীমান্ত ব্যাটালিয়নটিও দখলে নেয় তারা।
মংডু আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে দুই পারেই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাঝুঁকি বেড়েছে। রাখাইন রাজ্যে পাঁচ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে এখনো। তাদের সঙ্গে আরাকান আর্মির বিরোধ আছে। রাখাইনের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মংডু দখলে নেওয়ার পরপরই আরাকান আর্মি নাফ নদীতে নৌ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যাচ্ছেন কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট দিয়ে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পাঁচ দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্ট মার্টিনে খাদ্যসামগ্রীর মজুত কমে গেছে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি পণ্যবোঝাই জাহাজ বা কার্গো ট্রলার বাংলাদেশে আসতে পারছে না।
মিয়ানমারের মংডুর সঙ্গে বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। নাফ নদীটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমানা ভাগ করে রেখেছে। রাখাইন রাজ্যের বিপরীতে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত।
এদিকে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সেন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফ-উখিয়া হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত ২৭০ কিলোমিটারে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ।
টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে চলাচলকারী সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ গণমাধ্যমে বলেন, ৮ ডিসেম্বর আরাকান আর্মি মংডু দখল করার পর নাফ নদীতে নৌ চলাচল বন্ধ রাখতে প্রচারণা চালিয়েছে। নদীতে নামলে তারা গুলি চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এর আগেও টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রী পারাপারের একাধিক নৌযানে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, পাঁচ দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্ট মার্টিনে খাদ্যসামগ্রীর মজুত কমে গেছে। বিকল্প পথে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম অংশের সমুদ্রপথে প্রশাসন খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর উদ্যোগ না নিলে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষ বিপদে পড়বে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.