জ্বালানি তেল উত্তোলন হ্রাসে কুয়েতে মন্দার আশঙ্কা

জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজার নিয়ন্ত্রণে চলতি বছরের পুরো সময় উত্তোলন কমিয়েছে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো। এ ধারা আগামী এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দিয়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠনটি, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলনির্ভর কুয়েতের অর্থনীতিতে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছে, উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তে চলতি বছর মন্দায় থাকবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম দ্য ন্যাশনাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আইএমএফ বলছে, মৌলিক পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৪ সালে দেশটির অর্থনীতি মন্দায় থাকবে। তবে মধ্যমেয়াদে কিছুটা পুনরুদ্ধার হতে পারে।

সম্প্রতি ওপেক প্লাস দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর পরিকল্পনা ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এ সময়সীমা শেষে উত্তোলন ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে, যা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। পাশাপাশি দেশগুলো দৈনিক ১৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল অতিরিক্ত উত্তোলন কমাবে, যা ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

কুয়েতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত বছর ৩ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। ওই সময় উত্তোলন কমায় জ্বালানি তেল খাতে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ সংকোচন ঘটে। একই সময়ে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতও ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কুয়েতের অর্থনীতি ১ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। জ্বালানি তেল খাতে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সংকোচন ছিল এর প্রধান কারণ। যদিও জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে আংশিকভাবে এ সংকোচন পূরণ করেছে।

আইএমএফ বলছে, জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে কুয়েতের অর্থনীতি বৈশ্বিক ঝুঁকির প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এছাড়া ভোগ্যপণ্যের মূল্যে অস্থিরতা, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতি কিংবা গতি বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক সংঘাতের তীব্রতা বাড়ার কারণেও দেশটির অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সংস্থাটি আরো জানায়, জ্বালানি তেল উত্তোলন ও দাম কমে যাওয়ায় কুয়েতের আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য দুর্বল করে দিয়েছে। যদিও দেশটি আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ৩ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে।

তবে কুয়েতের আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য ‘শক্তিশালী’ রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। গত বছর দেশটির চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত ছিল জিডিপির ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ। একই সময়ে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার।

আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, ওপেক প্লাস উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর আগামী বছর কুয়েতের অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এছাড়া রাজস্ব ব্যয় কমলে চলতি বছর জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকবে। আগামী বছর এ খাতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ২ দশমিক ১ শতাংশ।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.