মংডুর দখল, আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েক মাস ধরে জান্তার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। এদিকে মংডুর দখলের পর নাফ নদের আরাকান জলসীমায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা।

এদিকে আরাকান রাজ্যের মংডু অঞ্চলের সন্ত্রাসী ফ্যাসিবাদী সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশ ডিভিশনের (নাখাখা-৫) শেষ পোস্টটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি এ কথা জানিয়েছে।

ইরাবতী বলছে, আরাকান আর্মি এখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের তিনটি শহরেরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করছে। এগুলো হচ্ছে- রাখাইন প্রদেশের মংডু ও বুথিডাং এবং চিন প্রদেশের পালেতোয়া। পালেতোয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্তও রয়েছে। তারা এখন দক্ষিণ রাখাইনের গয়া, তাউনগুপ এবং আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে।

এর আগে আরাকান আর্মি জানায়, ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর সরকার এবং সহযোগী রোহিঙ্গা মিলিশিয়াদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। মংডুর এই যুদ্ধের পরে প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের পাশাপাশি সামরিক অপারেশন কমান্ড ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি।

আরাকান আর্মি মে মাসের শেষের দিকে মংডু আক্রমণ শুরু করে। আর সীমান্তবর্তী এই শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে ছয় মাস সময় লাগল গোষ্ঠীটির।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা জেনেছি, আরাকান আর্মি টেকনাফ সীমান্তের ওপারের এলাকাটি পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। গতকাল থেকে সেদেশের জলসীমানায় নাফনদীতে সব নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাই আমরাও টেকনাফের ফিশিং ট্রলার মালিকদের অবহিত করেছি, নাফ নদী সীমান্ত এ মুহূর্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে কোনও ট্রলার না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের চট্টগ্রাম মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোয়াইব বিকাশ বলেন, জালিয়ার দ্বীপ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত নাফ নদ ও সাগরে আমাদের টহল জোরদার রয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের জলসীমা অতিক্রম না করতে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ জলসীমানায় আমরা কাউকে ঢুকতে দেবো না।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.